মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গমের নতুন দিগন্ত শরণখোলা

গমের নতুন দিগন্ত শরণখোলা
  • পতিত জমিতে গম চাষে সাফল্য

পতিত জমিতে পরীক্ষামূলক গম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন শরণখোলা উপজেলার বলেশ^র নদী সংলগ্ন ঝিলবুনিয়া গ্রামের চাষি জয়নাল আবেদীন আকন। চলতি বছর ২ বিঘা জমিতে  পরীক্ষামূলক গম চাষ করতে জমির চাষ, বীজ ও সার বাবদ তার ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার টাকা। ২ বিঘা জমিতে ৫০ মনের ও বেশি গম উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত প্রতিমণ গম বাজারে ১২শ’ টাকা দরে বিক্রি করে তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে বলে জানান তিনি। ভবিষ্যতে আরো বেশি জমিতে গম চাষ করে নিজে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখতে চান তিনি।

জয়নাল আবেদীন আকন পেশায় একজন মুদি দোকানি। পাশর্^বর্তী উত্তর কদমতলা গ্রামের কার্পেটিং রোডের পাশে একটি ছোট দোকানে দিন রাত কর্মব্যস্ত থাকেন। এর সঙ্গে প্রতি আবাদ মৌসুমে সামান্য কিছু জমিতে হাল চাষ করেন। কখন ও উফশী বোরো, কখন ও সূর্যমূখী আবার কখন ও বা বাঙ্গি চাষ করতেন। এসব চাষে এতদিন খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে এবার অবসরপ্রাপ্ত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের কাছে ছুটে যান। তার পরামর্শে গম চাষের উদ্যোগ নেন। 

বলেশ^র নদী সংলগ্ন ঝিলবুনিয়া গ্রামের দুই বিঘা পতিত জমিতে গম চাষ করেন তিনি। এতে তার সব মিলিয়ে ২৪ হাজার টাকা খরচ হয়। কম সময়ে ও কম পরিশ্রমে দুই বিঘা জমিতে গমের বাম্পার ফলন পেয়েছেন তিনি। ৫০ মণের ও বেশি গম ঘরে তোলার আগেই প্রতি মণ গম ১২শ’ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছেন। আগামীতে তিনি আরো বেশি পরিমান  জমিতে গম চাষ করবেন বলে জানান। তিনি শরণখোলা উপজেলার পতিত থাকা হাজার হাজার বিঘা জমিতে  গম চাষের জন্য অন্যান্য চাষিদের আহবান জানিয়ে বলেন, গম চাষে কম সময়ে, কম পরিশ্রমে ও কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। এতে নিজেদের লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ও ভূমিকা রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  রসুনের বিকল্প বিডি নিরা উদ্ভাবন

অবসরপ্রাপ্ত উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, কম পরিশ্রমে ও কম খরচে ভালো ফলনের জন্য তাকে গম চাষের পরামর্শ দিয়েছি। পরীক্ষামূলক চাষে তিনি ভালো ফলন পেয়েছেন। এ উপজেলায় এক ফসল উৎপাদনের পর বছরের অধিকাংশ সময় পতিত থাকা শত শত একর জমিতে গম চাষের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। এ ক্ষেত্রে চাষি জয়নাল আবেদীন আকন এর গম চাষ অন্যান্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারেন বলে তার অভিমত।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা ওয়াসিম উদ্দিন বলেন, শরণখোলায় গম চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। গম চাষের সবচেয়ে সুবিধাজনক দিক হলো এতে খুব একটা পানি সেচের প্রয়োজন হয়না। তাই চাষের খরচ সাশ্রয় হয়। তবে গম চাষের জন্য উপযুক্ত সময় বেছে নিতে হবে। শরণখোলায় যে কোনো চাষের ব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের সব ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন