শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লকডাউন নয়, জনসচেতনা জরুরি

লকডাউন নয়, জনসচেতনা জরুরি

দেশে করোনা সংক্রমণ আবারও বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মহামারির তৃতীয় ঢেউ প্রতিরোধে সরকারি আরোপিত বিধি নিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এ সময় তিনি মহামারি প্রতিরোধে লকডাউন কোনো সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেন। গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, লকডাউনে নিম্নআয়ের মানুষদের দুর্ভোগ বাড়ে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি। তাই লকডাউন না দিয়ে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি বিধি নিষেধ মেনে চলাই এই মহামারি প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী উপায়।

ডিআরইউ-র নসরুল হামিদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে দেশের রফতানিশিল্পে প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে। আবারও লকডাউনের সিদ্ধান্ত এলে শিল্পখাতের ঘুরে দাঁড়ানো ব্যাহত হবে। যা অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যেসব দেশ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেসব দেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে।

এসময় দোকান মালিক ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের টিকা গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এর আগে অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এতদিন বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা ছিলো পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব। কিন্তু এখন পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল এবং একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ফলে দেশে বিনিয়োগবান্ধব অবকাঠামো তৈরি হয়েছে।

এসময় ব্যাংকগুলোকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতে আরো বেশি ঋণ দেয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রাখার বিধান করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বাংলদেশ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করা জরুরি। বিশ্ব বাণিজ্যের ৯০ শতাংশই হয় ছয়টি ব্লকের মধ্যে। তাই রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি), ইউরোপীয় ইকোনমিক ইউনিয়ন, ইউএসএ, ইইউ, ইউকে ও আফ্রিকান কন্টিনেন্টাল ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট -এই ছয়টি ব্লকের সঙ্গে এফটিএ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।

আরও পড়ুনঃ  আশুলিয়া থানা পুলিশের উদ্যোগে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন

এলডিসি উত্তর সময়ে দরকষাকষির জন্য বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি। বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে এফবিসিসিআই ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন খাতের গবেষণা ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। সরকারের বিভিন্ন নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব বেসরকারি খাতের। কিন্তু এসব নীতি প্রণয়নের আগে সংশ্লিষ্ট খাতের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না। তাই বাস্তবায়নের সময় ব্যক্তিখাতের উদ্যোক্তাদের নানামুখী সমস্যায় পড়তে হয়। তাই নীতি প্রণয়নের আগে খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করার ও নীতির প্রভাব মূল্যায়নের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাবীব ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কাফিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।

ইপেপারে দেখুন

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন