শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সূচকে চমক, মূলধন বৃদ্ধিতে কৌতুহল

সূচকে চমক, মূলধন বৃদ্ধিতে কৌতুহল

বিদায়ি সপ্তাহে পুঁজিবাজার উত্থানের দারুণ চমক দেখিয়েছে। এই চমকে সব ধরনের সূচক, অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দরসহ মূলধন বেড়েছে। আগের সপ্তাহ থেকে বিদায়ি সপ্তাহে (রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার) পুঁজিবাজারের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই ও সিএসই) মূলধন বেড়েছে ৩৩ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূলধন বেড়েছে ডিএসইর ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা এবং সিএসইর ১৮ হাজার ৬ কোটি টাকা।
পুঁজিবাজারে মূলধন বাড়া-কমা স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে অতিরিক্ত বৃদ্ধি যেমন ভালো লক্ষন না, তেমনি কমাও না। সব ক্ষেত্রেই বাড়া-কমার একটা সীমা থাকে। যখন সেই সীমা অতিক্রম করে, সেই ক্ষেত্রে সবার মনে অনেকগুলোর প্রশ্ন তৈরি হয়। এসব প্রশ্নের পরিষ্কার ও যৌক্তিক জবাব জানা থাকলে, সেটা অন্য কথা। না জানা থাকলে সেই ক্ষেত্রে প্রায় সবাই বিযয়টি ভালো চোখে দেখে না। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পুঁজিবাজরের দুই স্টকের মূলধন বেড়েছে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। এ ধরনের বৃদ্ধি স্বাভাবিক নিয়মে হয়েছে এমনটি মানতে চাচ্ছে না বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশিষ্টরা।

তারা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে দেখা যাচ্ছে উত্থান ক্ষেত্রে দারুণ চমক দেখাচ্ছে পুঁজিবাজার। কেন দেখাচ্ছে তার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। হতে পারে গত বছরের শেষদিকের মন্দা পুঁজিবাজার থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে সব ধরনের বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে তারাই নতুন বছরে পুঁজিবাজার উত্থানের ঝলক দেখাচ্ছে। এই উত্থান পুঁজিবাজারে অতি দামে শেয়ার ক্রয় করা থেকে বিরত থাকতে বলছেন সংশিষ্টরা।

আরও পড়ুনঃ  পোশাক খাতে রফতানি: ঘুরে দাঁড়িয়েও শঙ্কা

দুই স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র মতে, গেল সপ্তাহের শেষে ডিএসইর পুঁজিবাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৪২ হাজার ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পুঁজিবাজার মূলধন বেড়েছে ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি ৫৫ লাখ। এই সপ্তাহ শেষে সিএসইর পুঁজিবাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৩১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৭০ হাজার ২৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইর পুঁজিবাজার মূলধন বেড়েছে ১৮ হাজার ৬ কোটি ৮২ লাখ। সপ্তাহের ব্যবধানে মূলধন বেড়েছে দুই পুঁজিবাজারে ৩৩ হাজার ৮৪২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

গেল সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারের সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই সপ্তাহে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দরও বেড়েছে। আগের সপ্তাহ থেকে গেল সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন পরিমাণ বাড়লেও সিএসইর কমেছে। গেল সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬ হাজার ৪৮৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪ হাজার ১৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ২ হাজার ৩২৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অপরদিক গেল সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৭৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৬৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৮৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

আরও পড়ুনঃ  টানা দুই মাস দেশের রপ্তানি আয় কমলো

গেল সপ্তাহের শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৩০ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৮৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই৩০ সূচক ৭০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট ও শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৪১ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ৬০৩ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে ও ১ হাজার ৪৭২ দশমিক ১৫ পয়েন্টে। গেল সপ্তাহের শেষে সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৮২৯ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৪৯৫ দশমিক ২১ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই৫০ সূচক ৫০ দশমিক ৮০ পয়েন্ট, সিএসই৩০ সূচক ৩১৮ দশমিক ৯২ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৪৯৭ পয়েন্ট ও সিএসআই সূচক ৫৩ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৫২২ দশমিক ৩০ পয়েন্টে, ১৪ হাজার ২৩২ দশমিক শুন্য ৫ পয়েন্টে, ১২ হাজার ৩১০ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে ও ১ হাজার ২৬৯ দশমিক ২৮ পয়েন্টে।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৮৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ২৮৬টির, দর কমেছে ৮৬টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টির কোম্পানির। লেদনের হয়নি পাঁচ কোম্পানির শেয়ার। সপ্তাহে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৪৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ২৮২টির, দর কমেছে ৬২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির কোম্পানির।

গেল সপ্তাহে ডিএসইতে ‘এ’ ক্যাটাগরির ৪ হাজার ২০৭ কোটি ৪৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। ওই সময় ‘বি’ ক্যাটাগরির ১৪ হাজার ৯৪০ কোটি ৮৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকা, ‘এন’ ক্যাটাগরির ৩০৮ কোটি ৮০ লাখ ২৯ হাজার টাকা ও ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৬৬ কোটি ১৫ লাখ ১১ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। ওই সপ্তাহে সিএসইতে ‘এ’ ক্যাটাগরির ১০৩ কোটি ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। ওই সময় ‘বি’ ক্যাটাগরির ৪৯ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা, ‘এন’ ক্যাটাগরির ২১ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার টাকা ও ‘জেড’ ক্যাটাগরির ২ কোটি ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  রানওয়ে দেখতে না পেয়ে ঢাকার ফ্লাইট গেল কলকাতা-চট্টগ্রামে

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন