ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটি টাকার ব্যবসা করছে চালকল সিন্ডিকেট

দেশের অধিকাংশ চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে কুষ্টিয়া জেলার ৪৬ অটো চালকল মালিক। প্রায় প্রতি বছর এ সিন্ডিকেট নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিয়ে লুটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থা আর নানা সুযোগে চালের বাজারকে অস্থির করে তুলছে এই সিন্ডিকেট।

গত কয়েক দিনের ব্যবধানে কুষ্টিয়া মোকামে সব ধরনের চালে কেজিতে এক টাকা বেড়েছে। আড়তে চাল সঙ্কট দেখিয়ে অনেক মিল মালিক চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। অথচ কুষ্টিয়া মোকামে গত এক সপ্তাহে ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল মজুদ আছে বলে তথ্য রয়েছে মিল মালিক ও জেলা প্রশাসনের কাছে। তারপরও দাম বাড়ানোর বিষয়টি পুরোপুরি অযৌক্তিক বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধানের দাম বৃদ্ধি ও মোকামে চাল সঙ্কটের অজুহাতে নতুন করে সব ধরনের চালে কেজিতে এক টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে মিল মালিকেরা। অথচ ধানের দাম গত এক সপ্তাহে নতুন করে বাড়েনি বলে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। নতুন ধান ওঠায় কোনো কোনো জাতের ধানের দাম কমেছে।

কুষ্টিয়ার খুচরা ও পাইকারি চালের ব্যবসায়ী শাপলা ট্রেডার্সের মালিক আশরাফুল ইসলাম বলেন, চালের বাজার কয়েক দিন ধরে স্থিতিশীল ছিল। নতুন করে গত শনিবার সকাল থেকে মিল গেটে ফের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে এক টাকা করে। তিনি বলেন, মিলের লোক এসেছিল। নতুন দাম নির্ধারণ করে লিখে দিয়ে গেছে। নতুন করে মিনিকেট ১ টাকা বেড়ে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ২ হাজার ৩০০ টাকা, বাসমতি ১ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা, কাজললতা ১ হাজার ৮৫০ টাকা, আটাশ ১ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একই চাল গত কয়েক দিন ধরে মিনিকেট মিলগেটে ৪৫ টাকা, বাসমতি ৪৯ টাকা, কাজললতা ৩৬ টাকা ও আটাশ ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল। কোনো কোনো চালে দেড় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

হাসকিং মিল মালিকদের অভিযোগ, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ অটো মিল মালিকদের হাতে। তারা দাম বাড়িয়ে দিলে বাজারে দাম বেড়ে যায়। নতুন ধান ওঠার এ সময় চালের দাম বাড়ার নজির সাধারণত নেই। তারপরও দাম বেড়ে যাচ্ছে কেন তা অটো মিল মালিকরা বলতে পারবেন।

লিয়াকত রাইস মিলের মালিক লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘হাসকিং মিল মালিকদের হাতে চালের ব্যবসা নেই। অটো মিল মালিকরা সব চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা কোটি কোটি টাকা মুনাফা করছেন। অথচ হাসকিং মিল মালিকরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন, দেউলিয়া হয়ে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। এখন নতুন ধান উঠছে, তাতে বাজার বাড়ার কথা না।

জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন জানান, মিল মালিকদের ডেকে চালের দাম না বাড়াতে অনুরোধ করা হয়েছি। যৌক্তিক কোনো কারণ না থাকলেও তারা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। অটো মিল মালিকরা এ কাজটি করছেন। তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান পরিচালন করা হবে। মোকামে ধান ও চালের মজুদের বিষয়টি নজরদারিতে আছে। এ ছাড়া তারা অন্য খানে গোডাউনে কোনো মুজদ করেছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

 

 

আনন্দবাজার/ইউএসএস

সংবাদটি শেয়ার করুন