যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলজুড়ে তাণ্ডব চালানো এক ঝাঁক টর্নেডোতে দেশটির কেনটাকি রাজ্যে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০ মাইল এলাকাজুড়ে টর্নেডোর আঘাতে রাজ্যটির ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবিত ব্যক্তিদের উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
জানা গেছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ৩৬৫ কিলোমিটার গতিতে টর্নেডোগুলো কেনটাকি অঙ্গরাজ্যজুড়ে আঘাত হানে।
আবহাওয়াবিদেরা জানান, শীতের মাসগুলোয় এ ধরনের শক্তিশালী টর্নেডো অস্বাভাবিক। টর্নেডো ও অগ্নিকাণ্ডে কেনটাকি রাজ্যে একটি মোমবাতির কারখানা এবং একাধিক পুলিশ স্টেশন বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া পাশের মিজৌরি অঙ্গরাজ্যে একটি নার্সিংহোম ভেঙে গেছে। ইলিনয়ে আমাজনের গুদামঘর বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ছয় কর্মী।
গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার এবারের টর্নেডোকে কেনটাকির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে আখ্যায়িত করেছেন। মেফিল্ড শহরে মোমবাতি কারখানা থেকে ৪০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি জানান, ঘটনার সময় কারখানাটির ভেতর প্রায় ১১০ জন কর্মী ছিলেন।
কেনটাকির গভর্নর আরও বলেন, আমার জীবনে এমন বিপর্যয় কখনো দেখিনি। এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। এখানে, এই কেনটাকিতে সম্ভবত ১০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
মেফিল্ড শহরে ইটের তৈরি ভবনগুলো মাটির সঙ্গে মিশে যেতে দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় পোস্ট হওয়া ভিডিও ফুটেজ ও ছবিতে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে বাড়িঘরের পাশে রাখা গাড়িগুলো। গ্রেভস কাউন্টিতে একটি ঐতিহ্যবাহী গির্জা ভেঙে পড়েছে। এছাড়া কাছাকাছি আরেকটি গির্জার একাংশও ভেঙেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের ঝড় পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, ইলিনয়, কেনটাকি, টেনেসি, মিজৌরি, আরকানস ও মিসিসিপি থেকে টর্নেডো হওয়ার ৩৬টি প্রতিবেদন পেয়েছে তারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বিপর্যয়কে সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় টর্নেডোর একটি বলে উল্লেখ করেছেন। শনিবার কেনটাকিতে জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করেছেন তিনি।
টর্নেডোতে বিপর্যস্ত সব এলাকাকে সাহায্য করার জন্য ফেডারেল সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এছাড়া এসব ঝড় সৃষ্টিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আনন্দবাজার/ টি এস পি