শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপকূলে অর্থনীতির বিপ্লব পায়রাবন্দর

স্বপ্নীল দাস, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
  • আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ
  • পাল্টে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের ধরন
  • অক্টোবর পর্যন্ত পণ্য খালাসে রাজস্ব আয় ৩১৯ কোটি
  • ২০২৩ সালে শেষ হবে অবকাঠামো নির্মাণ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর পায়রার নির্মাণ কাজ। দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই এগিয়ে চলছে এ বন্দরের কার্যক্রম। বন্দর থেকে রেল ও সড়কপথে দ্রুত সময়ে স্বল্প খরচে পণ্য সরবারহের সম্ভাব্যতায় ব্যবসায়ীদের কাছে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালের মধ্যে বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ হবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

এ বিষয়ে পায়রা বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) আজিজুর রহমান বলেন, দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বাণিজ্যিক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পায়রা বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট বন্দরের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এরপরই বন্দরে আসতে শুরু করে পণ্যবাহী জাহাজ। চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ১৬০ টি মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাসের মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আয় করে ৩১৯ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে পায়রা বন্দরের পরিচালক (প্রশাসন) যুগ্ম-সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ খান জানান, ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ। পাশাপাশি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সাড়ে ৩ হাজার গৃহনির্মাণ, ৭টি জলযান ক্রয়, ১ লাখ বর্গফুটের ইয়ার্ড নির্মাণ কাজ, সাড়ে ৪ কি.মি. ৪ লেন শেখ হাসিনা সড়কের নির্মাণ, প্রশাসনিক ভবন, নিরারপত্তা ভবন, অফিসার ডর্মেটরী, স্টাফ ডর্মেটরী, অফিসার্স ক্লাব ও মসজিদের নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  দেশের সব জেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের দাবি

বর্তমানে প্রমত্তা রাবনাবাদ নদের মোহনা ঘেঁষা লালুয়ায় চলছে প্রথম অত্যাধুনিক টার্মিনাল নির্মানের কাজ। গত বছরের ৩০ জুন দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চায়নার ‘সিএসআইসি ইন্টার ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী লিমিটেড’ এ টার্মিনাল নির্মানের কাজ শুরু করে। টার্মিনালের সঙ্গে মহাসড়কের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের জন্য নির্মাণ হচ্ছে সাড়ে ৬ কিলোমিটারের ৬ লেন সড়কের কাজ। এদিকে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাপিটাল এবং ম্যাইন্টেনিং ড্রেজিং কাজও চলমান রয়েছে। খুব শীঘ্রই আন্ধারমানিক নদীতে শুরু হবে সেতু নির্মাণ কাজ এবং লালুয়ার চান্দুপাড়া গ্রামে সাড়ে ৬ কিলোমিটারের বেড়িবাঁধ নির্মানের কাজ। বন্দর উন্নয়নে সরকারের আরও মহাপরিকল্পনা রয়েছে এবং ২০২৩ সালের মধ্যে অবকাঠামো নির্মানের প্রাথমিক কাজ শেষ হবে বলে জানান এ যুগ্ম-সচিব।

ব্যবসায়ীরা জানান, ইতোমধ্যে পায়রা বন্দরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমে দক্ষিণাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের ধরন পাল্টে যেতে শুরু করেছে। তবে বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা বাড়নোসহ বর্তমানে দেশের সকল ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করার দাবি উঠেছে ব্যবসায়িক সংগঠনের। পায়রা বন্দরের পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হলে দক্ষিনাঞ্চলের অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন