শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসপাতালগুলোতে ফের বাড়ছে আইসিইউ সংকট

দেশে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করেছে। গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মানুষের মৃত্যু ও আক্রান্তের হার সে চিত্রই দেখাচ্ছে। সবশেষ তথ্যমতে, দেশে করোনা শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এ অবস্থায় হাসপাতালগুলোতে ফের আইসিইউ সংকট তৈরি হচ্ছে। এরইমধ্যে রাজধানীতে করোনা ডেডিকেটেড ১৫টি সরকারি হাসপাতালের তিনটিতেই কোনো আইসিইউ শয্যা খালি নেই।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণের হার এভাবে বাড়তে থাকলে দ্রুত করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোগী শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় করোনা ডেডিকেটেড সরকারি হাসপাতালগুলোর সাধারণ শয্যা থেকে শুরু করে কেবিন ও আইসিইউতে রোগীর চাপ বাড়ছে। অনেক জটিল রোগীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ ও কেবিন সাপোর্ট দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতিতে রাজধানী ঢাকার অন্যতম তিনটি সরকারি হাসপাতালেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। অথচ গত সপ্তাহেও এসব হাসপাতালের সাধারণ শয্যাসহ আইসিইউর অনেক বেড ফাঁকা ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, করোনা রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ২৭৫টি সাধারণ শয্যার মধ্যে একটিও খালি নেই। বরং শয্যার বাইরে আরও তিনজন রোগী ভর্তি রয়েছে। ১০টি আইসিইউর কোনোটিই খালি নেই। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭০৫টি সাধারণ শয্যার মধ্যে খালি রয়েছে ৩৪৬টি। আর ২০টি আইসিইউ শয্যার কোনোটি খালি নেই। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৫০টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ২৬৩টি শয্যা ফাঁকা রয়েছে। তবে ২৪টি আইসিইউ শয্যার একটি মাত্র খালি রয়েছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৬৩টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ১৭৩টি শয্যা ফাঁকা রয়েছে। তবে ১০টি আইসিইউ শয্যার একটিও খালি নেই।

আরও পড়ুনঃ  জামিন পেলেন বুশরা

এর বাইরে করোনা ডেডিকেটেড কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ১৬৯ সাধারণ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি ৫৪টিতে, ফাঁকা ১১৫টি। ২৬টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি রয়েছে ১০টিতে। খালি রয়েছে ১৬টি। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ১৭৪টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ১৫৭টি শয্যা ফাঁকা রয়েছে। তবে ১৬টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ১০টি খালি রয়েছে। সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের ৯০টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ৬৮টি ফাঁকা আছে, ছয়টি আইসিইউ শয্যার চারটি ফাঁকা রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ২৩০টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ১৩৮টি ফাঁকা রয়েছে। ২০টি আইসিইউ শয্যার ১৬টিতে রোগী ভর্তি রয়েছে, চারটি ফাঁকা। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালের ৪৭০টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ফাঁকা ৩৭৩টি। ১৫টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ৭টি খালি রয়েছে। মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের ৫০টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ৪৮টি শয্যাই ফাঁকা। এ হাসপাতালে কোনো আইসিইউ শয্যা নেই।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১২৭টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ১০৫টিই ফাঁকা রয়েছে। ১০টি আইসিইউর মধ্যে খালি রয়েছে মাত্র দুইটি। শ্যামলী টিবি হাসপাতালে ১৮৩টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ১৬৯টি শয্যা খালি রয়েছে, এছাড়া পাঁচটি আইসিইউর সবগুলোই ফাঁকা রয়েছে। জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ১০৪টি শয্যার মধ্যে ৪৯টিই ফাঁকা রয়েছে। ১০টি আইসিইউর ৭টিই খালি রয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে ১৫টি সাধারণ শয্যার ১০টিই ফাঁকা রয়েছে। ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে ২৫০টি শয্যার সবগুলোই ফাঁকা রয়েছে। সেই সঙ্গে ২১২টি আইসিইউ শয্যার ১৩৪টি ফাঁকা রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  দুদকে সহায়তার আশ্বাস পররাষ্ট্র উপদেষ্টার

আইইডিসিআর’র উপদেষ্টা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, সংক্রমণ নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই বাড়ুক বা অন্য যেকোনো কারণেই; আমাদেরকে অবশ্যই এটি টেনে ধরতে হবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন