বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীনের কারখানা উৎপাদন প্রবৃদ্ধি চলতি বছরের অক্টোবরে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। মূলত বৈশ্বিক ও স্থানীয় চাহিদার দুর্বলতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানা বাণিজ্যযুদ্ধ দেশটির অর্থনীতির বৃহত্তম অংশগুলোকে প্রভাবিত করেছে। যে কারণে গত মাসে চীনের কারখানা কার্যক্রমে ধারণার চেয়ে বেশি মন্থরতা দেখা গেছে। খবর রয়টার্স।
গতকাল প্রকাশিত ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকসের (এনবিএস) পরিসংখ্যান অনুসারে, অক্টোবরে চীনের শিল্প উৎপাদন বছরওয়ারি ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে; যা রয়টার্সের মতামত জরিপের গড় পূর্বাভাস ৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম এবং সেপ্টেম্বরের ৫ দশমিক ৮ শতাংশের চেয়ে মন্থর।
সিডনির এএমপি ক্যাপিটালের প্রধান অর্থনীতিবিদ শেন অলিভার বলেন, বিনিয়োগ ও উৎপাদনের দুর্বলতা আস্থার পতন নির্দেশ করছে। বাণিজ্য যুদ্ধই এর অন্যতম বড় কারণ। এ পরিস্থিতি চীনা কর্তৃপক্ষের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার চাপ আরো বাড়াবে।
এদিকে অক্টোবরে চীনের দুর্বল পরিসংখ্যানের কারণে গতকাল এশিয়ার শেয়ারবাজার নিস্তেজ হয়ে পড়তে দেখা যায়। ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তিটির ওপর বাণিজ্যযুদ্ধের অব্যাহত নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
অক্টোবরে উৎপাদক পর্যায়ের মূল্য তিন বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে দ্রুতগতিতে পতনশীল থাকায় চীনের কারখানা খাতের বিস্তৃত কার্যক্রমে দুর্বলতা বহাল ছিল। গত মাসে চীনের ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম টানা ছয় মাসের মতো সংকুচিত হতে দেখা যায়।
গতকালের পরিসংখ্যান অনুসারে, অক্টোবরে সরবরাহকৃত শিল্প পণ্যের রফতানি মূল্য বছরওয়ারি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন মাস খাতটিতে পতন দেখা গেল। এছাড়া গত মাসে চীনের ইস্পাত উৎপাদন হ্রাস পেয়ে সাত মাসের সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। একই সময় সিমেন্ট উৎপাদন এক বছরের মধ্যে প্রথমবার সংকুচিত হয়েছে।
বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান শুল্কযুদ্ধ বৈশ্বিক চাহিদাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন ও আর্থিক বাজারগুলো অস্থিতিশীল করেছে। চীনের বাইরে বিশ্বের অন্যান্য বৃহৎ বাণিজ্য শক্তিও এ বাণিজ্যযুদ্ধের ধাক্কা খেয়েছে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস