আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্ভোদন হয়ে গেল ‘মরমী নাট্যমেলার’। উৎস নাট্যদলের আয়োজনে, দেশের প্রখ্যাত নাট্যকার মান্নান হীরার স্মরণে ৪ দিন ব্যাপী এই নাট্যোৎসব এর শুভ উদ্ভোদন ঘোষণা করেন বরেণ্য নাট্যজন মামুনুর রশীদ।
বৃহস্পতিবার (২৫ শে ফেব্র“য়ারি) রাজধানীর বেইলী রোডের ড. নীলিমা ইব্রাহীম মিলনায়তনে পর্দা উঠেছে এ উৎসবের। আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম. খালিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, বাংলাদেশ রেলওয়ে এর মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার, বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন এর সাংগঠনিক সম্পাদক তপন হাফিজ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারন সম্পাদক আহম্মেদ গিয়াস। আরও উপস্থিত ছেলেন দেশ বরেণ্য নাট্যজন ও নাট্যবোদ্ধারা। এছাড়া অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেছেন উৎস নাট্যদলের প্রধান উপদেষ্টা এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার।
বাঙালীর মুক্তি সংগ্রামের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে বীরত্বগাথার অমলিন ইতিহাস। আবার সেই বীরত্বগাথার উল্টোদিকে রয়েছে অসীম ত্যাগের সঙ্গে শহীদদের রক্তঋণের অধ্যায়। ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের কথা বলা তেমনই এক নাটক স্বর্ণজননী। নাটকটি রচনা করেছেন মান্নান হীরা, নির্দেশনা দিয়েছেন ইমরান হোসেন ইমু। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত নাটকটিতে উঠে এসেছে স্বাধীনতা যুদ্ধের আগুনলাগা সময়। পাক হায়েনাদের হিংস্রতায় যেসব নারী দগ্ধ হয়েছিল মেলে ধরা হয়েছে তাদের কয়েকজনের জীবনকাহিনী। উঠে এসেছে যুদ্ধকালীন নিষ্ঠুর সময়ে কী স্বপ্ন বুকে নিয়ে, বন্ধ নিঃশ্বাসে কেটেছে তাদের জীবন। সেই ঘটনারই এ নাটকটি তারই এক ক্ষুদ্র আখ্যান। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমরান হোসেন ইমু, রাকিবুল ইসলাম, অর্ক আহমেদ রিপন, করুনা বিশ্বাস, শাহীদ আপন, মেঘলা, এনায়েত, হেলাল, তাসলিমা আক্তার লিজাসহ অনেকে। নাটকের সঙ্গীত পরিকল্পনায় ছিলেন অপু মেহেদী ও শাহীদ আপন। নাটকটির নেপথ্যে ছিলেন, জুয়েল, স্বপন ও সেন্টু।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নাটকের চর্চা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। নাট্যাঙ্গন এর সকলকে একসাথে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, করোনার এই মহামারি কালে আমরা সারা বাংলাদেশ জুড়ে অসচ্ছল সংস্কৃতি কর্মীদের সহায়তা করেছি। একইসাথে বিভিন্ন দলগুলোকে অনুদান দিয়েছি। সামনে আরও দেয়া হবে। তবে শুদ্ধ নাট্যচর্চা চালিয়ে যেতে হবে। এত বড় উৎসব আয়োজনে উৎস নাট্যদলকে অভিবাদন জানিয়েছেন তিনি একই সাথে উত্তরত্তর শুভকামনা করেছেন।
উৎস নাট্যদলের সভাপতি ইমরান হোসেন ইমু জানান, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে পৌছে দেবার অন্যতম এক কারিগরের নাম মান্নান হীরা। তাই মান্নান হীরা ও উৎস নাট্যদলের রয়েছে নিবিড় এক সম্পর্ক। তাঁর অনন্য সৃষ্টি গুলো সবার মাঝে তুলে ধরতেই আমাদের এ আয়োজন। তিনি আরও জানান, আমাদের এই উৎসবকে সফল করে তুলতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ ও আকাশ আমাদের সহযোগীতা করেছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উল্লেখ্য, আজ উৎসবের ২য় দিন, ২৬ ফেব্র“য়ারি (শুক্রবার) আরণ্যক নাট্যদল মঞ্চায়ন করবে – নাটকঃ “ময়ূর সিংহাসন”। রচনাঃ মান্নান হীরা, নির্দেশনাঃ শাহ আলম দুলাল।
আনন্দবাজার/শাহী