চলতি বছর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে। এখানে মাঠের পর মাঠ সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে যেন গোটা উপজেলা সুরভিত হয়ে উঠেছে।
এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, হলুদে ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ। উপজেলা কৃষি অফিসের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ১৬৫ একর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। এ যেন কুয়াশায় ঢাকা শীতের চাদরে দিগন্ত জোড়া সরিষার হলুদ মাঠ। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ।
সরিষার ফুলে আকৃষ্ট মৌমাছিরাও ব্যস্ত মধু আহরণে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা মাঠ। হলুদের সমারোহে সজ্জিত সরিষার প্রতিটি ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন।
উপজেলার বারদী ইউনিয়নের এক সরিষা চাষী জানান, তিনি ৬ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। তার আশা ফুল অনুযায়ী এবার ফলনও হবে ভাল। সাদিপুর ইউনিয়নের চাষি আলী জানান, এ বছর ৩ বিঘা জমিতে তিনি সরিষা চাষ করেছেন। এবার ১০ থেকে ১১ মণ সরিষা পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।
শম্ভুপুরা ইউনিয়নের এক সরিষা চাষি জানান, ‘গত বছরের মতো এবারও মৌসুমী ফসল সরিষার আবাদ করেছি। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় এবার আরো বেশি ফলন ঘরে তুলতে পারবো।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আক্তার ভালো ফলনের জন্য করণীয় বিষয়ে বলেন, সরিষার চাষে বোরণ ব্যবহার করলে দানা পুষ্ট হবে ও ফলন বৃদ্ধি পাবে। জাত ভেদে সরিষা আবাদের মাত্র ৮০-১০০ দিনেই ফসল ঘরে তোলা যায়। প্রতি কেজি সরিষা থেকে ৩৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম তেল পাওয়া যেতে পারে। সরিষা চাষের জমিতে বোরো ধানের আবাদ ভালো হয়।
তিনি আরও বলেন, এ উপজেলার মাটি সরিষা আবাদের জন্য অনেক উপযোগী।মৌমাছি সরিষার কোনো ক্ষতি করে না। তারা সরিষার ফুলে বসে পরাগায়ন ছড়ায় বিধায় বিঘা প্রতি শতকরা ২৫ থেকে ৩০ ভাগ ফলন বেশি হয়।
এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য বারি সরিষা- ৯, ১১, ১৪, ১৫, ১৭ ও ১৮ জাতের ৩০টি প্রদর্শনী ও ৬ শতাধিক কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও বীনা ৪ ও ৯ জাতের সরিষাও আবাদ করা হয়েছে।
আনন্দবাজার/শহক