বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ একদিন যুদ্ধবিমান বানাবে: প্রধানমন্ত্রী

যুদ্ধবিমান বানানোর সক্ষমতা অর্জনে দেশ এগিয়ে  দেশ যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যশোর বিমান বাহিনী একাডেমিতে ৭৭ তম প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে যশোরে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করা ৭৭তম বিমানবাহিনী একাডেমি কোর্সের ২৯ জন অফিসার ক্যাডেটকে ফ্লাইং ব্যাজ ও ৭৭তম কোর্সের সম্মানসূচক তরবারি হস্তান্তর করেন বিমান বাহিনী প্রধান।

এ বছর কমিশন লাভ করলেন ২০ নারী অফিসার ক্যাডেটসহ মোট ৬৭ কর্মকর্তা। এরপর, মনোজ্ঞ ফ্লাইং পাসে সরকার প্রধানকে অভিবাদন জানায় বিমানের চৌকস কর্মকর্তারা।

পরে শুরু হয় বিমানবাহিনী আয়োজিত শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ। সে সময়, প্যারেডের মাধ্যমে নবীন কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় সালাম জানান প্রধানমন্ত্রীকে। সামরিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে বক্তব্য রাখেন সরকার প্রধান। শুরুতেই করোনা মহামারির কারণে সরাসরি এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা নীতি দিয়ে গিয়েছিলেন দেশের জন্য। এমনকি সেই সময় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য কিনেছিলেন সুপারসনিক মিগ-২১। শুধু বিমান বাহিনীই নয়, যুদ্ধের পর বাংলাদেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি সীমিত আকারে হলেও জাতির পিতা সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন।’

বিমান বাহিনীর উন্নয়নে বর্তমান সরকার সব সময়ই মনোযোগী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিমানবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। কেননা আমরা চেয়েছি এই বাহিনীকে যুগোপযোগী করতে। তাছাড়া, যেহেতু প্রযুক্তিভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো বলে ঘোষণা দিয়েছিলাম, কাজেই প্রযুক্তিভিত্তিক একটি বাহিনী গড়ে উঠুক সেই দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেই আমরা।’
বিমান বাহিনীকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলার নানান প্রয়াস বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমরা ৫টি ‘সি-১৩০’ জে বিমান ক্রয় করার চুক্তি সম্পন্ন করেছি। যার মধ্যে তিনটি বাংলাদেশে এসেছে। বৈমানিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে আরও ৭টি কে-এইটডব্লিউ-জেড ট্রেইনার বিমান সংযোজন করা হয়েছে এবং অচিরেই যুক্ত হচ্ছে পিটি সিক্স সিমুলেটর। এছাড়াও শিগগিরই যুক্ত হবে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, আর্মার্ড এরিয়াল ভেহিকল সিস্টেম, সর্বাধুনিক এয়ার ডিফেন্স র‌্যাফডার।’

আরও পড়ুনঃ  করোনা হাসপাতালে ইসিজি মেশিন উপহার দিল খুলশীর প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা

‘ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিমানবাহিনীকে উন্নত, আধুনিক ও ভবিষ্যতের জন্য আরও আধুনিক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয়েরও কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান সরকারপ্রধান। তিনি আরও বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা হয়তো এখন তেমন অর্থ ব্যয় করতে পারছি না। তবে আমাদের পরিকল্পনা আছে বিমানবাহিনীকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলার।’

বাংলাদেশকে নিয়ে উচ্চাশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা লালমনিরহাটে চালু করেছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিমান চলাচল, বিমান নির্মাণ, গবেষণা, মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চা হবে। যার মাধ্যমে আমি আশা করি, একদিন আমরা এই বাংলাদেশে যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, তৈরীও করতে পারবো- এমনকি একদিন আমরা মহাকাশে পৌঁছেও যেতে পারি সেই প্রচেষ্টা আমাদের থাকবে।’

তরুণ কর্মকর্তাদের উদ্বুদ্ধ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এই বাংলাদেশ, তোমাদের মতো তরুণদের কাছে যে প্রত্যাশা করে। সেই আশা পূরণে তোমরা উপযুক্ত হয়ে নিজেদের গড়ে তুলবে। দেশপ্রেম নিয়ে নিজ দায়িত্ব পালনে অবিচল থাকতে হবে বিমানে সংযুক্ত নতুন সদস্যদের।’

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন