ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টগার হাওরে ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

সুনামগঞ্জ জেলা ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বালিজুড়ী গ্রাম সংলগ্ন সরকারি কাকিয়ার দাইড়, ঘোড়া মারার দাইড় ও হাজারিয়ার দাইড় নামক তিনটি জলাশয় খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারা না দিয়ে এলাকার কৃষকদের স্বার্থে আজীবন উন্মুক্ত রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসীর সাধারণ জনগন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বালিজুড়ী গ্রামের দক্ষিণপার্শে টগার হাওর পাড়ে বালিজুড়ী গ্রামবাসী এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় তিন শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, বালিজুড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির ধর্মপাশা উপজেলা শাখার সাগঠনিক সম্পাদক মো. সিরাজুল হক, সাধারণ কৃষক আজিজুল হক, মো. দুলা মিয়া, আব্দুল হেলিম মিয়া, মো. ইয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বালিজুড়ী গ্রামের উত্তরপাশে টগার হাওর ও দক্ষিণ পাশে শৈলচাপড়া হাওর দুটি রয়েছে। এই দুটি হাওরে বালিজুড়ী ও আশপাশের গ্রামের কৃষকের প্রায় চার হাজার একর বোরো জমি রয়েছে। দীর্ঘ বছর ধরে বোরো মৌসুমে কাকিয়ার দাইড়, ঘোড়া মারার দাইড় ও হাজারিয়ার দাইড়ের (জলাশয়) পানি দিয়ে ওই দুটি হাওরের বোরো জমিতে সেচ কার্যক্রম চলে আসছে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, এই তিনটি জলাশয় অতীতে কখনো খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হয়নি। স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল ১৪২১ বঙ্গাব্দের জন্য এই তিনটি জলাশয় খাস কালেকশনে নেওয়ার জন্য সার্বিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। তৎকালীন সময়ে বালিজুড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. নূরুজ্জামান এ নিয়ে ইউএনওর মাধ্যমে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করেন। পরে ভু’মি বিধি মোকাদ্দমা নং ২/২০১৪-১৫(ধর্মপাশা), তারিখ ১৯.১১.২০১৪ ইং মূলে ১৪২১ বাংলা সনের জন্য এই তিনটি জলাশয় খাস কালেকশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (রাজস্ব শাখা) থেকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পর থেকে সরকারিভাবে খাস কালেকশনের জন্য এটির ব্যাপারে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি আমরা শুনতে পাচ্ছি, এই তিনটি জলাশয় খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারা নেওয়ার জন্য আবারও স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল নানাভাবে পায়তারা করে আসছে।

উল্লেখ্য যে, এই তিনটি জলাশয় খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারা না দেওয়ার জন্যে চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভু’মির) কাছে এলাকাবাসীর পক্ষে আবেদন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এই তিনটি সরকারি জলাশয় খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হযেছে কী না সেটি ফাইলপত্র না দেখে বলা সম্ভব নয়। ইজারা দেওয়া হয়ে থাকলে এখন এ নিয়ে আর কিছুই করার নেই। পানির অভাবে বোরো জমিতে সেচ কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হলে অবশ্যই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ছাড়া জনস্বার্থে আগামী বছরে এ নিয়ে কী করা যায় সেই বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার/শাহী/মোবারক

সংবাদটি শেয়ার করুন