ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঁশখালীতে লবণমাঠে সোনালি ধান, অবাক দর্শনার্থীরা

বাঁশখালীর কয়েকটি উপকূলীয় ইউনিয়নে লবণের মাঠে আমন ধানের চাষ হচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে লবণ মাঠে ধান চাষ শুরু হলেও ব্যাপকভাবে ধান চাষ হচ্ছে ২০১৭ সাল থেকে। এই চাষটি আউশ এবং আমনের মাঝামাঝি সময়ে হলেও এটিকে আমন বলা হয় বলে জানান উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ শহীদ উল্লাহ।

লবণ মাঠে শুষ্ক মওসুমে লবণ চাষ ও বর্ষা মওসুমে ধানের চাষ হচ্ছে। বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় প্রতিদিন লবণ মাঠের সোনালি ধানের সমারোহ দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন। অনেকে লবণের মাঠে ধান চাষ দেখে অবাকও হচ্ছেন।

বাঁশখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালীতে চলতি আমন মৌসুমে লবণের মাঠে লবণাক্ত ও খরা সহিঞ্চু ধানের চাষ হয়েছে ৫৬৫ হেক্টর জমিতে। বাঁশখালীর শেখেরখীলের কোনাখালী এবং গন্ডামারা ইউনিয়নের মধ্যে কিছু এলাকায় লবণের মাঠে চাষ হয়েছে। লবণাক্ত ও খরা সহিষ্ণু ধানের সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে ছনুয়া ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নে মোট ৩০০ হেক্টর জমিতে ব্রি-ধান ৪৭ ও ১৫ হেক্টর জমিতে বিনা-১০ জাতের ধানের চাষ হয়েছে।

এবছর বাঁশখালীর উপকূলীয় ইউনিয়নগুলোতে লবণের মাঠে ৫.৫-৬.০ মেট্রিক টন/হেক্টর আমনের ফলন হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ এই করোনা ভাইরাসের মহামারিতেও কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আবাদ কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

কৃষি ব্যাংকসহ সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক আবাদ কার্যক্রম সফল করতে কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণের ব্যবস্থা করে রেখেছে। এছাড়াও ইতিমধ্যে কৃষি অফিস থেকে ভতুর্কি মূল্যে কৃষকদেরকে কিছু রিপার (ধান কাটার যন্ত্র) বিতরণ করা হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ করোনা ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থেকে কৃষকের সেবা দিচ্ছে। দেশের মধ্যে যেন কোনো খাদ্যসংকট দেখা না যায়, সেই জন্য কৃষকের জমি অনাবাদী না থাকে এমন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

বাঁশখালীর উপকূলীয় ইউনিয়নগুলো ঘুরে দেখা যায়, বিলের পর বিল ছেয়ে গেছে। যতদূর চোখ যায় শুধু সোনালি ধানের শীষ। মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে আধা পাকা ধানের শীষের সমারোহ। প্রত্যাশিত ফসল ঘরে তোলার আশায় বুক বেঁধেছেন চাষীরা। সঠিক সময়ে ধান কাটতে না পারলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা।

এ ব্যাপারে ছনুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের কৃষক লেয়াকত আলী বলেন, ‘আমি ২ কানি জমিতে ব্রি-ধান ৪৭ এর চাষ করেছি। এই বছর প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন বেশ ভালো হয়েছে। পোঁকা-মাকড়ের আক্রমণ তেমন হয়নি। ধান পাঁকতে শুরু করেছে।’

এ বিষয়ে ছনুয়া ব্লকে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদ উল্লাহ আনন্দবাজারকে বলেন, ’লবণ উৎপাদন সাধারণত বর্ষাকালে হয় না। বর্ষাকালে অর্থাৎ খরিপ-২ মৌসুমে আউশ এবং আমন ধানের মাঝামাঝি সময়ে এই আগাম আমন ধান চাষ করা হয়। বিশেষ করে লবণ সহিঞ্চু জাত ব্রিধান-৪৭ ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। এই জাতের ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা জমি পতিত না রেখে ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।’

আনন্দবাজার/শাহী/বেলাল

সংবাদটি শেয়ার করুন