ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম বন্দরের ভ্যাট ফাঁকি ৪৬২ কোটি টাকা

 চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এই তথ্য উদ্ঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতোমধ্যে এনবিআরের মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর প্রায় ৪৬২ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করে নিরীক্ষা প্রতিবেদন দিয়েছে।

তবে চট্টগ্রাম বন্দরের মতো সরকারি সংস্থার এমন  ভ্যাট ফাঁকিতে এনবিআর কর্মকর্তারা ব্যাপক বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সেবার বিপরীতে সঠিকভাবে পরিশোধ করা হয় না বলে অভিযোগ পায় এনবিআর। ফলে তারই পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআরের আদেশে ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটি নিরীক্ষার জন্য নিরীক্ষা দল গঠন করে মূসক গোয়েন্দা। প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদান, দাখিলপত্র ও ভ্যাটসংক্রান্ত দলিলাদি দিতে পোর্ট অথরিটিকে ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি দেওয়া হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ কিছু কাগজপত্র দেয়। পরে চাহিদামতো আরও কাগজপত্র দিতে একই বছরের ১৯ নভেম্বর আবার চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু চলতি বছরের ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিল করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ১৯৯১ ও একই আইনের বিধিমালা অনুযায়ী মূসক নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভ্যাট-সংক্রান্ত দলিলাদি (মূসক চালান-১১, বিক্রয় হিসাব পুস্তক, দাখিলপত্র) সংরক্ষণের নিয়ম-নীতি রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সেবা প্রদানের বিপরীতে বিক্রয় হিসাব পুস্তক সংরক্ষণ করে না, যা মূসক আইনের ধারা ৩১ ও বিধি ২২ লঙ্ঘন।

প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বন্দরের রপ্তানি পণ্য চালানের বিপরীতের নানা হ্যান্ডলিং চার্জ, বন্দর চার্জ ও কন্টেইনার ভাড়ার সেবামূল্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করা হয়, যাতে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। অব্যাহতিপ্রাপ্ত সেবা বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের আয়ের ওপর ভ্যাট হিসাব করা হয়, যাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বন্দরের আয় হিসেবে দেখা যায়, বার্থ হেয়ার চার্জ, ক্রেন চার্জ, গ্যান্ট্রি ক্রেন চার্জ, পোর্ট ডিউ অন ব্যাসেল, পোর্ট ডিউ অব কান্ট্রি ক্র্যাপ্ট, হেয়ার অন মোরিং, ব্রেদিং চার্জসহ প্রায় ৪০ রকমের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য। ওই অর্থবছর ৪০ ধরনের সেবার উপর প্রযোজ্য ভ্যাট ২৯৮ কোটি ৭৭ লাখ তিন হাজার ৫৯১ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি ২১০ কোটি ৩০ লাখ পাঁচ হাজার ২৮১ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করলেও ৮৮ কোটি ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩১০ টাকার ভ্যাট এখনও পরিশোধ করেনি।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ও সচিব ওমর ফারুক জানান, আমরা মামলার কোনো কাগজ এখনও পাইনি। পেলে আমাদের অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্ট রয়েছে তারা বিষয়টা দেখবে। ভ্যাট ফাঁকির বিষয়ে তিনি জানান, এখানে ফাঁকির কোনো বিষয় না। এটা তো কোনো ব্যক্তি না। সরকারি টু সরকারি প্রতিষ্ঠান। কোনো কারণে হিসাবে ভুল হয়ে থাকলে তা বন্দর কর্তৃপক্ষ দেখবে।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন