ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাতের টানেই উঠে আসছে সড়কের কার্পেটিং, কাজ বন্ধ

হাতের টানেই উঠে আসছে সড়কের পিচ। কাজ শেষ হতে না হতেই লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫৩ লাখ টাকায় সংস্কার করা আড়াই কিলোমিটার রাস্তার পিচ হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন। পরে জনতার ভয়ে কাজ রেখে পালিয়ে যান ঠিকাদারসহ প্রকৌশলীরা।

সপ্তাহখানেক আগেও ওই সড়কে নিম্নমানের এবং নিয়মবহির্ভূত খোয়া ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ উঠার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

জানা গেছে, লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের কালীগঞ্জ উপজেলা সদরের তুষভান্ডার থেকে দলগ্রাম পর্যন্ত ২ হাজার ৬০০ মিটার দীর্ঘ এবং ১৬ ফুট প্রস্থের সড়কটি সংস্কারের কাজ পায় ‘বিনিময় ট্রেডার্স’ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পরে ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজটি যৌথভাবে তা কিনে নেন জেলার দু’জন ঠিকাদার। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের অধীনে তুষভান্ডার-দলগ্রাম রাস্তা সংস্কারের কাজটি দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

সংস্কার কাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। ব্যাপারটি স্থানীয় লোকজন একাধিকবার কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবু তৈয়ব মোহাম্মদ সামছুজ্জামানকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। পরে গত ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে আসেন কালীগঞ্জের ইউএনও রবিউল হাসান। সড়ক সংস্কারে ব্যবহৃত খোয়ার ‘থিকনেস’ কমসহ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

ওই এলাকার মোসলেম উদ্দিন জানান, রাস্তার কাজের ব্যাপারে আমরা কিছু বললেই ঠিকাদারের লোকজন আমাদের ওপর উল্টো রাগ দেখায়। আর এভাবেই সরকারের টাকা নষ্ট হচ্ছে। তারা নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সে কারণে কার্পেটিং করতে না করতেই তা উঠে যাচ্ছে।

কাজটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান জানান, নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার হয়নি দাবি করেন। বলেন, নতুন কার্পেটিংয়ে হাত দিয়ে টানলে সেটি উঠে আসবেই। দুই থেকে তিন দিন পর তা আর উঠে আসে না।

এই ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবু তৈয়ব মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, আমি একবার গিয়ে নিম্মমানের কাজের প্রমাণ পাওয়ায় তা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিম্নমানের কাজ প্রমাণিত হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন