ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দু’দফা বন্যায় মানিকগঞ্জের খামারিদের সাড়ে ৩ কোটি টাকা লোকসান

দু’দফা বন্যায় প্লাবিত হয়ে মানিকগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে লালন-পালন করা গবাদিপশুর খামারিরা  মারাত্তক বিপাকে পড়েছে ।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৬ হাজার ৫৬৩ জন খামারি আছে। এবারের বন্যায় মানিকগঞ্জের খামারিদের মধ্যে ২৬৯ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় তিন হাজার ৫৭৫টি গবাদি পশু। তাছাড়া খড়, ঘাস ও দানাদার খাবার এবং গবাদিপশু থাকার ঘরও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলে প্রায় তিন কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা সূত্র জানায়, জেলায় প্রথম দফার বন্যা শুরু হয় ২৭ জুন, শেষ হয় ৭ জুলাই। দ্বিতীয় দফায় শুরু হয় ১১ জুলাই, শেষ হয় ১১ আগস্ট।

মানিকগঞ্জ ফ্রেন্ডস ডেইরি ফার্মের পরিচালক মো. মহিনুর রহমান জানান, মানিকগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় তার ফার্মে ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক গবাদিপশু আছে। এসব গরুর জন্য আশেপাশের প্রায় ২০ বিঘা জমিতে তিনি ঘাস বপন করেছিলেন।

‘কিন্তু বন্যার পানিতে জমি ডুবে যাওয়ার কারণে সব ঘাস পচে গেছে। তাই শুধু খড় ও দানাদার খাবার দিয়ে এখন গবাদিপশুগুলো লালন-পালন করা হচ্ছে বলে জানান এ খামারি।

একই উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের খামারি আবুল হোসেন বলেছেন, বন্যায় গোয়াল ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় প্রতিবেশি এক ব্যক্তির বাড়িতে গাভী রাখেন তিনি। সেখানে গাভী পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবা দেওয়া হয়। তারপরই আবার বাছুরের নাভি ফুলে পোকা বের হতে থাকে। গাভী ও বাছুরের চিকিৎসা বাবদ প্রায় চার হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান তিনি।

হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সেলিমপুর গ্রামের সাত্তার মোল্লা জানান, পদ্মার পানিতে গ্রামের বেশির ভাগ ঘর-বাড়ি ডুবে গেছে। কৃষি কাজের পাশাপাশি চারটি গরু পালন করতেন তিনি। বন্যার পানিতে গরুর ঘরে পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানি উঠে। এ কারণে তিনি গরুগুলো বিক্রি করে দেন। পরে বন্যার পানি কমে যাওয়ার সময় আধা পাকা গরুর ঘরটি ভেঙে যায়। এতে আমার অর্ধলক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

অপরদিকে, দৌলতপুর উপজেলার আফাজ এগ্রিকালচারাল ফার্মের পরিচালক আবদুল মজিদ জানান, তার খামারে ৫০টি গরু ছিল। বন্যার পানিতে খামার ও তার চারপাশের এলাকা ডুবে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে তিনি ৪০টি গরু বিক্রি করে দেন। এতে তার লোকসান হয় কমপক্ষে চার লাখ টাকা। এ ছাড়াও গবাদিপশু থাকার ঘর নষ্ট হয়।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল ইসলাম জানিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এসব খামারিদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে প্রণোদনা দেওয়ার ব্যাপারে পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।

আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন