শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিন্তা শক্তি বাড়াতে পারে প্রাণায়ম

প্রাণায়াম অর্থ ‘প্রাণ+বায়ু’। অর্থাৎ প্রাণ থেকে যে বাতাস বের হয় বা প্রাণে যে বাতাস প্রবেশ করানো হয়। আরো সহজভাবে বললে বলা যায় আপনি আপনার ইচ্ছে মতো শ্বাস-প্রশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করার যে প্রক্রিয়া ব্যবহার করবেন তাকে প্রাণায়াম বলে। শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখতে কিভাবে এর মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখতে পারবেন সেই সম্পর্কে আজ আমরা জানবো ‘অনলুম বিলুম’ এবং ‘ভ্রমরি’ প্রাণায়াম সম্পর্কে।

যোগ চর্চা এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি যা আপনি নিজেই নিজের চিকিৎসা করতে পারবেন। ইয়োগাতে এমন কিছু ক্রিয়া আসন ও প্রাণায়াম আছে যা অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি আপনার-

– দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারবেন।
– শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়াতে পারবেন।
– শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতা বাড়াতে পারবেন।
– মানসিক শক্তি বাড়িয়ে অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
– চিন্তা শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
– রাতে ঘুম ভালো হওয়ার জন্য মহাঔষধ হিসেবে কাজ করে।
– সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।

আসুন আজ আমরা প্রাণায়ামের মাধ্যমে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় ও নিয়ম জেনে নেই।

১. অনলুম বিলুম
যেভাবে করবেন: অনলুম বিলুম করার অনেকগুলো নিয়ম আছে। আজ আমরা সবচাইতে সহজ নিয়মটি দেখবো। প্রথমে একটি ইয়োগা ম্যাট অথবা আরামদায়ক জায়গায় পদ্মাসনে, সুখাসন বজ্রাসন বা যেকোনো আরামদায়ক পজিশনে বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। মাথা কোনো দিকে না ঝুকিয়ে সোজা রাখুন। এবার বা হাতে ধ্যান মুদ্রা বা আপনবায়ু মুদ্রায় রাখুন। ডান হাতের বৃদ্ধা আঙুল ডান নাকের পাশে রেখে হাল্কা চাপ দিন। যেন নাকের ছিদ্রু বন্ধ হয় কিন্তু নাক বেঁকে না যায়। এবার বা নাক দিয়ে ধীরে ধীরে আরাম করে কোনো শব্দ না করে লম্বা শ্বাস নিন। ২ থেকে ৫ সেকেন্ড নিঃশ্বাস আটকে রাখুন। আটকে রাখা অবস্থায় ডান হাতের অনামিকা আঙুল দিয়ে বা নাক বন্ধ করুন। তারপর ডান নাক দিয়ে ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন।

আরও পড়ুনঃ  দেশে ডেঙ্গু টিকার সফল পরীক্ষা, ৪ ধরন প্রতিরোধেই কার্যকর

এবার ঠিক একইভাবে ডান নাক দিয়ে ধীরে ধীরে আরাম করে কোনো শব্দ না করে লম্বা শ্বাস নিন। ২ থেকে ৫ সেকেন্ড নিঃশ্বাস আটকে রাখুন। আটকে রাখা অবস্থায় ডান হাতের বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে ডান নাক বন্ধ করুন। তারপর বা নাক দিয়ে ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন।

নিঃশ্বাস ছাড়া নেয়ার সঠিক হিসেব রাখতে চাইলে শ্বাস নেয়ার সময় মনে মনে ১ থেকে ৫ পর্যন্ত গণনা করুন এবং শ্বাস ছাড়ার ছাড়ার সময় ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গণনা করুন। এভাবে ৪ থেকে ৮ বা ১০ বার করুন। এরপর কিছুক্ষণ বসে আরাম করুন।

২. ভ্রমরি
এই প্রাণায়ামটি করার সময় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নাক দিয়ে শব্দ করতে হয়। যে শব্দটা ভ্রমর বা মৌমাছির মতো শব্দ হয় তাই এই আসনটিকে ভ্রমরি বলা হয়। ভ্রমরি করার জন্যও অনেক নিয়ম আছে আমরা সবচাইতে সহজ নিয়মটি আজ দেখাবো। প্রথমে একটি ইয়োগা ম্যাট অথবা আরামদায়ক জায়গায় পদ্মাসনে, সুখাসন, বজ্রাসন বা যেকোনো আরামদায়ক পজিশনে বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। মাথা কোনো দিকে না ঝুকিয়ে সোজা রাখুন। এবার আপনার দুই হাতের বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে দুই কানের ছিদ্রু বন্ধ করে দিন। এরপর বাকি চার আঙুল চোখ ও নাকের উপর রাখুন। খেয়াল রাখবেন আঙুলের চাপ যেন খুব বেশি না হয় আবার খুব হালকাও না হয়। এবার লম্বা শ্বাস নিয়ে সম্পর্ণ শ্বাস ছেড়ে দিন। আবার লম্বা শ্বাস নিন এবং নাক দিয়ে ‘উম্মম্মম্ম….’ ধরনের শব্দ করতে করতে শ্বাস ছাড়তে থাকুন। শ্বাস ছাড়ার সময় খেয়ার করুন আপনার নাক, মাথা, গলা ও বুকের দিকে কম্পন তৈরি হচ্ছে। এই কম্পনটি অনুভব করার চেষ্টা করুন। জোড় হিসেব করে এই প্রাণায়মটি ৪,৬,৮ বার করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ  বাণিজ্য বিনিয়োগ বাড়াতে জিটুজি বৈঠক জানুয়ারিতে

সতর্কতা:
– প্রাণায়াম করার জন্য তেমন কোন বিধি নিষেধ নেই। মোটামুটি সবাই প্রাণায়াম করতে পারবেন।
– প্রতিদিন সকালে এটি করার চেষ্টা করুন। আপনার সারাদিন ভালো যাবে।
– ভরা পেটেও প্রণায়াম করতে পারবেন। তবে খালি পেটে করা ভালো।

 

 

 

আনন্দবাজার/ইউএসএস

সংবাদটি শেয়ার করুন