বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানির পরিমান বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান। ভারতের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থগিত হওয়ার ফলে বিপাকে পড়া পাটকলগুলোকে চালু রাখতে ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাটপণ্যের চাহিদা পূরণে প্রধানত বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানির কৌশল নির্ধারণ করছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার।
পাকিস্তানের দৈনিক পত্রিকা ডন-এর এক প্রতিবেদনে সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য তুলে ধরেছ।
পাকিস্তানে পাটশিল্প গড়ে ওঠে উনিশ শতকের সত্তুরের দশকে। তবে বিশেষ করে প্যাকেজিংয়ে প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হওয়ায় চাহিদা অনেক কমে যায়। বর্তমানে পাঁচ থেকে ছয়টি কারখানা চালু রয়েছে। এসব পাটকল থেকে উৎপাদিত পাটজাত পণ্যে দেশের চাহিদা মেটানো হয় ও হাতেগোনা কয়েকটি দেশে রফতানি করা হয়।
আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের প্রধান উৎপাদক দেশ বাংলাদেশ এবং ভারত। তবে সীমান্ত উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ভারতের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক বাতিল করেছে পাকিস্তান। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে শুল্কমুক্ত পাট আমদানির চিন্তাভাবনা চলছে। এ লক্ষ্যে দুই দেশের দ্বিপাক্ষীক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রচেষ্টাও চলমান।
পাকিস্তান অবশ্য বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানি করে। ঢাকা ও ইসলামাবাদের মাঝে মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তির আওতায় হ্রাসকৃত শুল্কে পাট আমদানি করে পাকিস্তান।
ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এ নিয়ে ইমরান খান সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনার মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষীক আঞ্চলিক ইস্যুতে স্থবিরতা কাটবে বলে আশা করছে পাকিস্তান।
অপরদিকে করোনা মহামারীর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশও পোশাক ও পাট খাতের জন্য নতুন বাজার খুঁজছে। পাকিস্তান আমদানি শুল্ক মওকুফ করলে বাংলাদেশ থেকে রফতানি বৃদ্ধি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে পাকিস্তান সরকার পাট আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে স্থানীয় পাটশিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি করতেই সরকারের এমন উদ্যোগ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়েছে, আগামী অক্টোবর পর্যন্ত পাটপণ্যের ক্রয়াদেশ তারা পেয়ে গেছেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আবদুল রাজ্জাক দাউদ জানান, এক বছরে পাটপণ্য রফতানি দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিশেষ করে ইতালি, সুইজারল্যান্ড, গ্রিস, তরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইরাক ও মালয়েশিয়ার বাজারে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানি পাটপণ্য প্রবেশ করায় রফতানিতে এই উল্লম্ফন। এর কারণে পাকিস্তানের এখন আরো অনেক বেশি পরিমান কাঁচামালের দরকার হবে। পাশাপাশি নতুন পাটকল স্থাপনের প্রক্রিয়াও শুরু হতে পারে শিগগিরই।
আনন্দবাজার/এফআইবি