আর কয়েকদিন পেরোলেই ঈদ। ঈদকে ঘিরে বেড়ে চলেছে পোশাকধারী মানুষদের সংখ্যা। সম্প্রতি নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রাণীসম্পদ অফিসের উদ্যোগে ক্যাম্প করে গবাদী পশুর মাঝে মেয়াদ উত্তীর্ণ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে ভ্যাকসিন প্রদানকৃত পশুর মালিকদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। তারা ভ্যাকসিন প্রদানকারীদের অবরুদ্ধ করে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ২১ জুলাই মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের অসুরখাই গ্রামে।
জানা যায়, অসুরখাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসের আয়োজনে গবাদী পশুর পিপিআই, তরকা ও খুড়া রোগের ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। যেখানে শুরু থেকেই কামারপুকুর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাণী সম্পদ স্বেচ্ছাসেবকরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। এসময় ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার গবাদী পশুর মালিকরা উপস্থিত হয়ে তাদের গরু ও ছাগলের ভ্যাকসিন দেয়ান। এর মধ্যে কয়েকটি গরু ভ্যাকসিন দেয়ার পরই অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তৎক্ষণাৎ মাথায় পানি দেয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠে। এতে গরুর মালিকদের সন্দেহ হলে তারা ভ্যাকসিনের বোতল যাচাই করে দেখেন তা ২০১৩ সালেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে।
এর ফলে ভ্যাকসিন প্রদানকৃতদের মাঝে এক ধরণের আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এলাকাবাসী প্রাণী সম্পদ অফিসের শিক্ষানবিশ স্বেচ্ছাসেবকদের আটক করে রাখে। পরে উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ রাসেদুুল হককে জানালে তিনি পশুর কোন ক্ষতি হলে তার দায় দায়িত্ব নিজে নিবেন বলে মন্তব্য করে আটকৃতদের ছেড়ে দেয়ার জন্য জানান। এর প্রেক্ষিতে প্রায় ২ ঘন্টা পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয় বলে গরুর মালিকরা জানিয়েছেন।
গরুর মালিকরা জানান, কিভাবে সরকারী অফিস থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হলো। আমরা যদি বিষয়টা যাচাই না করতাম তাহলে তো তাদের প্রতারণা ধরতে পারতাম না। এর ফলে আমাদের পশুর ক্ষতি হলে কে দায় নিতো? আমরা এর উপর্যুক্ত বিচার চাই।
স্বেচ্ছাসেবকদের থেকে সাখাওয়াত হোসেন টন্নু জানান, আমাদেরকে উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিস থেকে এসব ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা জানিনা এগুলো আসলে মেয়াদ উত্তীর্ণ কিনা। কিন্তু যখন ভ্যাকসিন প্রদানের ফলে পশু অসুস্থ হয়ে পড়ে এতে পশুগুলোর মালিকেরা চেপে ধরলে আমরা দেখতে পাই যে, ভ্যাকসিনগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। তখন বিষয়টা অফিসে জানালে ভ্যাকসিন দিয়ে যেতে বলেন এবং কোন ক্ষতি হলে তারা দেখবেন বলে জানান।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রাসেদুল হক এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের ওষুুধের স্টক বেশ কয়েকদিন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তাদেরকে পড়ে আর কোন ওষুুধই সরবরাহ করা হয়নি। তারা কোথায় থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পেয়েছে তাও আমাদের জানা নেই। এটা কারো কারসাজি হতে পারে।
নীলফামারী জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মোনাক্কা আলী জানান, বিষয়টি আমার আমলে নেই। তবে খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাসিম আহমেদ জানান, পশু মালিকদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবীদের আমার অফিসে ডাকা হয়েছে। তারা মেয়াদ উত্তীর্ন ওষুধ আসলে কোথায় পেলো তা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আনন্দবাজার/শাহী/মনন