রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ববাজারে স্বরুপকাঠির রোপশিল্প

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ একটি জেলা পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলায় প্রাচীনকাল থেকে গড়ে উঠেছে নানান শিল্প।অধিকাংশই ব্যক্তিমালিকানায় গড়ে উঠেছে এরই মধ্যে অন্যতম নেছারাবাদের রোপশিল্প। স্বরুপকাঠি উপজেলার দারিদ্র্য বিমোচন ও অস্বচ্ছাল এবং বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে পিরোজপুরের স্বরুপকাঠি (নেছারাবাদ) ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন বা বিসিক শিল্পনগরীতে গড়ে উঠছে একাধিক রিসাইকিলিন রশিশিল্প।সরকারের ক্ষুদ্র ও মাজারি ঋণ আর শিল্পউদ্যোক্তাদের পুজি সমন্বয়ে জাহাজের পুরাতন প্লাষ্টিক রশিগুলো রি-ফ্রেস করে পুনর্ব্যবহার প্রস্থিতি করণে ও পাট জাত পণ্য উৎপাদনে বিসিকে ৭টি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠিানে নারী-পুরুষ ৭ হাজার ৩২৩ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি এর প্রভাব বিস্তার লাভ করতে শুরু করে এখানকার বিভিন্ন গ্রামে। গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহীনি সহ নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন তাদের পরিবারের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা শেষ করে, অবসর সময়ে শিল্প নগরী থেকে সংগ্রহীত কাচামাল নিয়ে চুক্তির মাধ্যমে কাজ করে থাকেন।এতে করে এখানকার অনেক পরিবারের খন্ডকালিন সময়ে কাজের মাধ্যমে আয়ের উৎস সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারের বিভিন্ন ঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে পল্লী কারুশিল্পীদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পিরোজপুরের স্বরুপকাঠির (নেছারাবাদ)‘র বিসিক শিল্পনগরীতে কুটির শিল্পের প্রসর ঘটছে।এতে তৈরী হয়েছে হাজার-হাজার নারী- পুরুষের আত্মকর্মসংস্থান। স্থানীয় শিল্পউদ্যোক্তাতারা বলেছেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম মোংলা বন্দরে আসা বিদেশী জাহাজের ব্যবহৃত রশি ৫০ থেকে ১০০ হাত লাম্বা পরিত্যক্ত প্লেষ্টিকের রশি ও কাচিরশি নিলাম দরে ক্রয় করে গ্রামীণ নারী ও পুরুষ শিল্পকর্মীরা এসব রশি বা কাছি গুলো রি-ফ্রেস করার জন্য খুলে আলাদাকরে ।এবং এগুলো ধৌতকরা, শুকানো ও বাচাই করে চিকন আশ তৈরীর পর কাঠের হাতল মেশিন দ্বারা চিকুন দড়ির মোড়া করে আধুনিক প্রযুক্তির মেশিনে নতুন করে একই কাজে ব্যবহার উপযোগী করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  এবারের বাণিজ্য মেলা হতে পারে অনলাইনে

এই রশি বা দড়ি লঞ্চ, কারগো, ইষ্টিমার ও জেলেদের সমুদ্রে মাছের ট্রলার লঙ্গনের কাজে নতুন ভাবে পূণরায় ব্যবহার যোগ্য করা হয়। এ ৫টি ধাপে রি-ফ্রেস মোটিভের পর নৈপূণ্যভিত্তিক প্রযুক্তির আধুনিক মেশিনে আরও ৯টি ধাপে রিসাইকিলিন করে রবি,লায়লন, প্লেষ্টিকের রশি, মেনিলা নতুন ভাবে তৈরী করে এবং দেশীয় উৎপাদনশীল পাট দ্বারা সুলতী, ভয়ারসহ পাটজাত পণ্য তৈরী করে শ্রীলংকা, মিয়ানমার,ফিলিপাইন, জাপান,কোরিয়া ও এমেরিকা ও ভুটনে রপ্তনী হচ্ছে। কারুশিল্পের শতাধিক প্রডাক্টের বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে ও এসব শিল্পপণ্যগুলোর চাহিদা দিনদিন আরও বেড়ে চলছে।দেশের বিভিন্ন ক্যান্টারমেন্টে সেনাবাহীর ট্রেইনিংয়ে যে দড়ি বা রশি ব্যবহার করা হয় তার অধিকাংশই নেছারাবাদ(স্বরুপকাঠি) বিসিক শিল্পনগরীর রোপ শিল্প থেকে রপ্তনীকরাসহ দেশের নানানবিধ কাজে ব্যবহৃতর চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ববাজারের ৭ রাষ্ট্রে এ রোপ শিল্প রপ্তনী হচ্ছে।

কিন্তু বর্তমান বিশ্বের সমসাময়িক করোনা ভাইরাস তীব্র সংক্রমণের কারণে ভালো নেই এই শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক পরিবার।
নেছারাবাদ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কর্মকর্তা মো শাহীদুর রহমান বলেন,বর্তমানে বিসিক শিল্প নগরে মোট ১৬৭ টি প্লট আছে, যার মধ্যে বরাদ্দকৃত প্লট সংখ্যা ১৪৪টি, বরাদ্দকৃত শিল্প ইউনিট ৯৯টি, উৎপাদনরত শিল্প ইউনিট ৭৭ টি এবং ২৯টি প্লট বরাদ্দের অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে ১৪টি রয়েছে রোপশিল্প(রিসাইক্লিন শিল্প)। সরকারের অর্থিক ঋণের সহায়তায় পিরোজপুরের একমাত্র এ শিল্প নগরীতে নেছারাবাদে হাজার –হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং সরকারের প্রতিবছর কোটি টাকা রাজস্ব আয় বাড়ছে।

আরও পড়ুনঃ  করোনা পরবর্তী রফতানি বাণিজ্যের সুযোগ গ্রহণে কাজ করতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

আনন্দবাজার/মিজান

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন