নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন বাগানে অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বিদেশী ফল ড্রাগন উৎপাদিত হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রয় হচ্ছে। অত্যন্ত লাভজনক এই বিদেশী ফলের বাগানের পরিসর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের উপকারী ড্রাগন ফল চাষে ঝুঁকছেন উপজেলার কৃষকরা।
ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় এই ফল অত্যন্ত জনপ্রিয়। বাংলাদেশে এই বিদেশী ফল চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ। একটি ড্রাগন ফলের গাছ ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে এবং বছরে ৬ মাস ফল দেয়। সাধারণত মে মাসে গাছে ফল ধরতে শুরু করে এবং ৩৫ দিনের মধ্যেই এই ফল খাওয়ার উপযোগী হয়। উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে এই ফল বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করাও সম্ভব।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলার ৪.৫ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান তৈরি করা হয়েছে। উদ্বুদ্ধ কৃষকদের কৃষি অফিস ড্রাগনের চারা থেকে শুরু করে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এই ফসলগুলো চাষ করলে একদিকে কৃষকরা যেমন কম খরচে ও কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করতে পারেন অপরদিকে জমির উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পায়। উপজেলার অনেক তরুণরা পড়ালেখার পাশাপাশি বর্তমানে এই লাভজনক ড্রাগন ফল চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
উপজেলার কালিগ্রাম ইউনিয়নের রঞ্জনিয়া গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মো. নাইস জানান, পড়ালেখা শেষ করে চাকরি নামক সোনার হরিণের পেছনে না দৌড়ে নিজেই কিছু করার প্রত্যয় থেকে আমি প্রায় ৯ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান তৈরি করেছি। ড্রাগন চাষ করে আমি বর্তমানে অনেক লাভবান হয়েছি। অনেক মানুষ আজ আমার বাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ড্রাগন ৪০০-৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম জানান, ২০১২ সাল থেকে উপজেলাতে ড্রাগন ফল চাষের নীরব বিপ্লব শুরু হয়। এখন ড্রাগন ফল উপজেলার কৃষকদের কাছে একটি লাভজনক ফলের নাম। প্রতিদিনই কৃষকরা কৃষি অফিসে এসে ড্রাগন ফল সম্পর্কে জেনে যাচ্ছেন। এছাড়াও এই বাগান তৈরিতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চারা সরবরাহ থেকে শুরু করে সরকারি ভাবে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস/এন এ