দিন যত যাচ্ছে, সাভারে ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তৈরি পোশাকশ্রমিকদের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। এর মধ্যে পেশাগত পরিচয় গোপন রাখায় বিপাকে পড়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে পোশাকশ্রমিকদের নমুনা সংগ্রহ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন করোনার উপসর্গে ভোগা পোশাকশ্রমিকরা।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ না করার অভিযোগ করে আসছিলেন পোশাকশ্রমিকরা। তাঁদের অভিযোগ, নমুনা দেওয়ার জন্য সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। সে জন্য কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন শ্রমিকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
ভুক্তভোগী একাধিক পোশাকশ্রমিক জানান, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার নমুনা দিতে যাওয়ার পর তাঁদের জানানো হয়, এখন থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আর নমুনা সংগ্রহ করা হবে না। তবে যাঁরা নিজেদের পেশা গোপন করেছেন, তাঁদের নমুনা ঠিকই নেওয়া হয়েছে। আর যাঁরা সঠিক পেশার পরিচয় দিয়েছেন, তাঁদের ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা জানান, হাজার হাজার তৈরি পোশাকশ্রমিকের নমুনা সংগ্রহের মতো সক্ষমতা নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।
এদিকে, উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সাভার শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন পোশাক কারখানার কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাঁদের মধ্যে করোনার কোনো উপসর্গ নেই, তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে না। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পোশাকশ্রমিকদের নমুনা নিজ নিজ কারখানা কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) বা বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সঙ্গে সমন্বয় করে নিজস্ব বুথ থেকে সংগ্রহ করবে। প্রয়োজনে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করবে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
তবে করোনা পরীক্ষার জন্য পোশাক কারখানাগুলোতে কবে থেকে বুথ চালু হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
এদিকে, নমুনা পরীক্ষার বাইরে থাকা সন্দেহভাজন পোশাকশ্রমিকরা কারখানায় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শিল্পাঞ্চলে তৈরি পোশাকশ্রমিকদের মধ্যে সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে সব পোশাক কারখানা বন্ধের পরামর্শ দিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা স্বাক্ষরিত ওই চিঠি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে পাঠানো হলেও তাতে সাড়া মেলেনি।
আনন্দবাজার/শাহী