শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব পোলট্রি খামার মালিক: ব্যাংক লোন নিয়ে দিশেহারা

তিনটি পোলট্রি খামারের আয়ে নিজেদের সংসার ছাড়াও কর্মরত ২৫-৩০ জন যুবকের সংসারও চলতো। করোনা ভাইরাসের কারণে দেশ লকডাউন ঘোষণার পর তাদের পোলট্রিতে নামে ধ্বস। যারফলে ৩ খামারি পুজি হারিয়ে হয়েছেন নি:স্ব। সেই সাথে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ নিয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।

জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের রংগীরকুল এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হান্নান, মাওলানা মখলিছুর রহমান ও মোহিতুর রহমান। ২০১১ সালে বাড়ির পাশে প্রায় ৬০ শতক ভূমিতে “বিসমিল্লাহ পোলট্রি ফার্ম” নামে গড়ে তুলেছিলেন একটি খামার। অনেকটা সফলও হয়েছিলেন তারা। সময়ের বিবর্তনে তিন ভাই পৃথকভাবে প্রায় ১৫০ শতক ভূমিতে খামারটি বিস্তীর্ণ করেন। আর এসব খামারে কর্মসংস্থান হয় স্থানীয় ২৫ থেকে ৩০ জন যুবকের। এই ২৫-৩০ জন যুবক ছাড়া স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ীরাও এ খামারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।

সরেজমিনে গেলে খামার ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান, মাওলানা মখলিছুর রহমান ও মোহিতুর রহমান জানান, ব্যাংক লোনের মাধ্যমেই মোটামুটি ভালোই চলছিল তাদের খামার ব্যাবসা। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারনে মুরগির খাদ্য, ওষুধ ও ভ্যাকসিনের মূল্য চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে গোশত ও ডিমের নায্য মূল্য না পাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে তাদের খামার। খাবারের অভাবে শেডে থাকা প্রায় সাড়ে তিন হাজার মুরগ ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে করে প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তারা।

এছাড়াও বর্তমানে প্রতি ডিমের পেছনে তাদের খরচ পড়ে ছয় থেকে সাড়ে ছয় টাকা। কিন্তু বিক্রি করতে গিয়ে প্রতি ডিমে পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে চার থেকে পাঁচ টাকা। পোলট্রি উপকরণের দাম বাড়লেও কমেছে ডিম ও গোশতের দাম। এ কারণে গত দু’মাসে তারা অনেকটা পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

আরও পড়ুনঃ  তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বাড়ানোর আহ্বান

তারা আরও জানান, তাদের তিন জনের যৌথ ব্যাংক লোন আছে প্রায় ৪০ লাখ টাকা। এছাড়াও আব্দুল হান্নানের “বাদশা পোলট্রি ফার্ম “, মাওলানা মখলিছুর রহমানের “বিসমিল্লাহ পোলট্রি ফার্ম ” এবং মোহিতুর রহমানের “মা-বাবা পোলট্রি এন্ড ফিশারিজের” এর নামে পৃথকভাবে আরও ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা ব্যাংক লোন আছে। বর্তমানে ফার্মের যে অবস্থা তাতে পৈত্রিক জমি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করা ছাড়া কোনো উপায় তারা দেখছেননা। অথচ দু’মাস আগে তাদের প্রত্যেকের ফার্মে ছিলো ১০ থেকে ১২ হাজার করে মোরগ।

বর্তমানে মাত্র দেড় থেকে দুই হাজার করে মোরগ নিয়ে বসে আছেন। তাদের মতে- পোলট্রি শিল্পে সুদিনের আশায় এখনো খামারটি ধরে আছেন। তবে তারা জানেন না সেই সুদিন আর কবে আসবে।

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন