বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিরামিক শিল্পে করোনার থাবা

রফতানিমুখী সিরামিক শিল্পে চলতি মূলধন শূন্যের কোটায়

করোনার প্রভাবে বিশ্ববাণিজ্য আজ অবরুদ্ধ। ক্রয়াদেশ বাতিলের মতো ঘটনা ঘটছে হারহামেশাই। এ প্রেক্ষাপটে পণ্যের মূল্য পরিশোধ বিলম্বিত হচ্ছে। এর ফলে সিরামিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর চলতি মূলধন এরই মধ্যে শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)। এদিকে সংগঠনটি সরকারের কাছে সিরামিক খাতের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের জন্য দাবি জানিয়েছে।

জানা গেছে, দেশের সিরামিক (টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারি ওয়্যার) খাতের বিপর্যয় ঠেকাতে গত ২৩ মার্চ অর্থমন্ত্রীর কাছে সহায়তার আবেদন করে বিসিএমইএ। সেখানে ছয়টি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে।

এইদিকে দেশের সিরামিক শিল্পে ৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে দেশী-বিদেশী ৬৮টি প্রতিষ্ঠান। এ খাতের সঙ্গে সমপৃক্ত আছে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ। রফতানির মাধ্যমে এই খাত থেকে প্রতি বছর ৪০০ কোটি টাকার বিদেশী মুদ্রা অর্জন হয়। আর স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি পণ্য। অর্থনীতিতে খাতটির অবদান বিবেচনা করে করোনার প্রাদুর্ভাবে সিরামিক খাতের পরিস্থিতি তুলে ধরে সরকারের সহায়তা চেয়েছে বিসিএমইএ।

অর্থমন্ত্রীর কাছে ছয় দফা প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে-

সিরামিক শিল্পে উৎপাদন কার্যক্রম চালু রাখার জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিনা সুদে ও বিনা জামানতে ন্যূনতম পরবর্তী দুই প্রান্তিকের জন্য প্রয়োজনীয় চলতি মূলধন সরবরাহ করা।

এ শিল্পে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের ঋণের সুদ দুই প্রান্তিকের জন্য মওকুফ করা এবং পরিশোধের সময়সীমা আগামী এক বছর পর্যন্ত মুলতবি রাখা।

আরও পড়ুনঃ  সৈয়দপুরে কাঁচাবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্র

আগামী ছয় মাসের জন্য সিরামিক কারখানাগুলোর ভ্যাট, ট্যাক্স, এআইটির কিস্তি প্রলম্বিত করা, কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ইত্যাদি পরিষেবার বিল পরিশোধের সময়সীমা আগামী এক বছর পর্যন্ত মুলতবি রাখা এবং কোনোভাবেই এ সময়ের মধ্যে ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে সরবরাহ নিশ্চিত করা।

এছাড়া সিরামিক খাতের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১ হাজার কোটি টাকার একটি আপত্কালীন তহবিল গঠন করে পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি, বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করার।

সংগঠনটির সর্বশেষ প্রস্তাবনাটি হলো, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় নির্বাহে আগামী এক বছর পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা জামানতে অর্থায়ন প্রাপ্তির সুযোগ রাখা।

বিসিএমইএর মতে, প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিয়ে সেগুলোর বাস্তবায়ন করা হলে সিরামিক শিল্প মালিকদের কিছুটা হলেও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে সিরামিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকট কাটিয়ে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন