ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টার্মিনালগুলোতে জীবাণুনাশক দিচ্ছে বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবীরা

মরণঘাতী করোনাভাইরাস সারা বিশ্বকে নাজেহাল করে দিয়েছে কয়েক মাসের মধ্যেই। বিপদজনক এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশেও। দিন দিন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ায় দেখা দিয়েছে এর মহামারী আকার ধারণ করার শঙ্কা।

এমন পরিস্থিতিতে যখন দায়িত্বশীলরাও পিছিয়ে যাচ্ছে দায়িত্ব থেকে তখন এগিয়ে এসেছে স্বেচ্ছাসেবী কিছু যুবক। বিদ্যানন্দের উদ্যোগে কয়েকজন তরুণ যুবা নেমেছেন জনবহুল জায়গাগুলো জীবাণু মুক্ত করার যুদ্ধে। নিজেদের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই এই ক্রান্তিকালে দেশের কথা চিন্তা করে মাঠে নেমেছেন অনন্ত আরফাত, ফারুক আহম্মেদ, সালমান খান, মিজানুর রহমান সৈকত, সোহরাব হোসেন বিপ্লব, আশরাফুল, তানভীর, সম্রাট, হাসিবরা।

সংগঠনটির এই স্বেচ্ছাসেবকরা বাস টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন, লঞ্চঘাট সহ মসজিদগুলোতে ছিটাচ্ছেন জীবাণুনাশক। হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণু মুক্ত করার সুযোগ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষকে। এছাড়া বিনামূল্যে বিতরণ করছেন তাদের তৈরি করা মাস্ক।

স্বেচ্ছাসেবক অনন্ত আরফাত বলেন, যেসব জায়গায় জনসমাগম হচ্ছে আমরা জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছি। লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন, মসজিদ এসব জায়গায় যেন করোনার জীবাণুটা ছড়িয়ে পড়তে না পারে তাই আমরা জীবাণুনাশক দিচ্ছি। দেশে যখন করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেল, তখন আমরা চিন্তা করলাম এটা নিয়ে আসলে কী করা যায়। যেহেতু এই ভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ মেডিকেল ইকুয়েপমেন্ট নেই, তাই আমরা চিন্তা করলাম এটাকে যেন ছড়িয়ে পড়ার আগেই প্রতিরোধ করা যায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা পথচারীদের তাৎক্ষণিক ভাবে হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণু মুক্ত করে দিচ্ছি। এটা করে আমরা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। কীভাবে এই ভাইরাস থেকে বেঁচে থাকা যায় সে বিষয়ে বলছি। আর আমরা বিনামূল্যে সবাইকে মাস্ক দিচ্ছি। বিশেষ করে বিভিন্ন মেডিকেলে ডাক্তার এবং নার্সদের বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করছি।

সংক্রমনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে আমাদেরও এখন বাসায় থাকা উচিৎ ছিল। কিন্তু বৃহৎ স্বার্থে আমরা নিজেরা ঝুঁকি নিয়েই এই কাজগুলো করে যাচ্ছি।

বিদ্যানন্দ মূলত শিক্ষা নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠন। তারা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত অসহায়, ছিন্নমূল, পথশিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে থাকে বিনামূল্যে। তাদের ‘এক টাকায় আহার’ বেশ প্রশংসিত একটি উদ্যোগ, যেখানে অসহায় পথশিশুদের ১ টাকার বিনিময়ে খাবার দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যতিক্রমী নানা উদ্যোগের কারণে বরাবরই বেশ আলোচিত।

উল্লেখ্য, দেশে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছে, আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে ২০ জন। আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১৯ জনকে এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪৪ জন।

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস 

সংবাদটি শেয়ার করুন