জনবহুল এলাকা সাভারে করোনা প্রতিরোধে সতর্কতা নেই সাধারণ মানুষের মাঝে। সাভারের বিভিন্ন মার্কেট ও বিপনী বিতানসহ ফুটপাতে শত মানুষের ভীরেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেই কারো। জনসমাগম এড়ানোর নির্দেশ মানছেন না কেউই। বন্ধ হয়নি অনেক কোচিং সেন্টার ও স্কুল।
এদিকে, সাভার শিল্পঞ্চলের কারখানাগুলো খোলা থাকায় প্রতিনিয়ত হাজার হাজার শ্রমিকরা চলছে গণপরিবহনে। যাতায়াতের পথে এরা কেনাকাটা করছেন বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাত থেকে।
দেখাগেছে, সাভারের সিটি সেন্টার, নিউ মার্কেট, রাজ্জাকপ্লাজাসহ বিভিন্ন মার্কেট ও বিপনী বিতানে প্রতিনিয়ত থাকে প্রচুর ক্রেতা ও মানুষের ভীর। সাভার বাসস্ট্যান্ডের ফুটপাতগুলোও থাকে সব সময় জনাকীর্ণ। এসব এলাকায় দোকানী ও খদ্দেররা করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি সিংহভাগ ক্রেতা ও বিত্রেতারা মুখে মাস্ক ছাড়া চালিয়ে যাচ্ছেন বিকিকিনি।
সাভার সিটি সেন্টারের মোবাইল দোকানদার খলিল, রাজ্জাক প্লাজার কসমেটিকস দোকানী সিরাজ, সিরাজ মার্কেটের মিষ্টি ব্যবসায়ী রসিক লালসহ প্রায় অর্ধশত ফুটপাতের দোকানী ও ক্রেতাদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, করোনা ভাইরাস সবার মনে আতংক সৃষ্টি করলেও মার্কেট ও বিপনী বিতান এবং ফুটপাতে প্রতিনিয়ত প্রতিরোধ ছাড়াই মানুষের সমাগম হচ্ছে। মুখে মাস্ক ছাড়াই সারাদিন-রাত দোকান করতে হচ্ছে এদের। তা না হলে ব্যবসায় ক্ষতির কথা বলছেন তারা। মার্কেট কর্তৃপক্ষও করোনা প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
সচেতন সাভারবাসীদের অনেকেই জানান, মার্কেট ও বাসস্ট্যান্ডে শতশত ক্রেতা, যাত্রী ও গণ পরিবহনগুলোও যেন চলছে আগের মতই। করোনা আতংকের মধ্যেও থেমে নেই জন-জীবন। কাজের প্রয়োজনে মানুষ ছুঁটে চলছে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কোন প্রকার প্রতিরাধমূলক ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই এ ধরনের সমাগম এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন।
সাভারে অনেক স্কুল ও কোচিং সেন্টার খোলা থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। অনেকেই সরকারী ঘোষনার সাথে সাথেই সন্তানদের স্কুল ও কোচিং সেন্টারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
সাভারের শিল্পাঞ্চলে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী খোলা থাকায় অনেকেই শংকা প্রকাশ করেছেন। ফ্যাক্টরীগুলোতে করোনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও জনসমাগম এড়ানোর কোন উপায় নেই সাধারণ শ্রমিকদের।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেছেন, করোনা প্রতিরোধে সতর্ক হতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু মানুষ নিজে সচেতন না হলে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এজন্য সকলকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার নির্দেশ মেনে চলতে অনুরোধ করেন তিনি।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা জানান, করোনা প্রতিরোধে সাভারের আমিনবাজারে কোয়ারেন্টাইনের জন্য ২০ শষ্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য প্রকল্পে প্রস্তুত রয়েছে ৬ শষ্যা বিশিষ্ট আলাদা আইসোলেশন।
এ পর্যন্ত ১৯ জন রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে। সাভারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিবসহ সকলকে নিয়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির সভাপতি সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সকলকে নিয়ে সাভারের জনসমাগম হচ্ছে এমন এলাকায় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আনন্দবাজার/এফআইবি