শরীরের রোগ নিয়ন্ত্রণ রাখার ক্ষেত্রে পুষ্টিগুণে ভরপুর রসুন প্রায় বিকল্পহীন। তাই অনেকেই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখেন রসুন। কিন্তু রসুনের বাজার দর বেড়ে গেলে এর বিকল্প কিছুই থাকে না।
যদিও রসুনের বিকল্প ফসল উদ্ভাবন করেছেন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম জামাল উদ্দিন। তিনি রসুনের বিকল্প এই ফসলের নাম রেখেছেন ‘বিডি নিরা’। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় বীজ বোর্ড এরই মধ্যে ‘বিডি নিরা’কে (SAU Garlic Chive 1) নিবন্ধন করা হয়েছে।
ড. জামাল উদ্দিন জানান, রসুন ‘বিস্ময়কর একটি ওষুধ। এতে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ ও বি৬, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, এবং জিঙ্ক রয়েছে। তাই রসুনকে বলা হয় প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। অনেকে আবার এটাকে গরিবের পেনিসিলিনও বলেন।
ড. জামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘বিডি নিরা’ স্বাদ ও পুষ্টিগুণে অনেকটা রসুনের মতোই। বাংলাদেশে মসলা পণ্য আমদানি করতে হয়। আর তাই বছর জুড়ে মসলার বাজার থাকে অস্থির। আমদানি বন্ধ থাকলেই দাম বেড়ে যায়। আর এসব চিন্তা থেকেই রসুনের পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে রাখার জন্য আমার এ গবেষণা।
তিনি বলেন, ‘বিডি নিরা’ তে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন সি, ক্যারোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। এটি ডায়াবেটিকস, দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
তিনি বলেন, চাষাবাদ প্রক্রিয়ার হিসেবে ফসলটি মূলত বাল্ব (কন্দ) ও বীজ থেকে বংশবৃদ্ধি করে। বাল্ব লাগালে ৩০-৩৫ দিনের মাঝেই ফলন দেবে। পরে ১৫ দিন পরপর শাক বা পাতা সংগ্রহ করা যাবে। একটি বাল্ব থেকেই বছরে ১২ থেকে ১৩ বার ফসল পাওয়া সম্ভব হবে।
আর প্রতিটি গাছ থেকে ১৫০-২০০ গ্রাম শাক পাওয়া যাবে। একবার শাক সংগ্রহ করার পর পুনরায় ওখান থেকেই ফসল হবে এবং বাল্বের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। এতে করে কৃষক একসঙ্গে নতুন বাল্বও পাচ্ছে আবার ফসলও পাচ্ছে।
আনন্দবাজার/এম.কে