লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। গতকাল রবিবার (২৮ জুলাই) রাতে তারা জেলা শহরের চকবাজারের একটি চায়নিজ রেস্টুরেন্টে সভা করেছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুর আহ্বানে দুই ভাইস চেয়ারম্যান ও ১৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান মিলিত হন। এ সময় তারা ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্বিগুণ কমিশন আদায়ের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কারণে-অকারণে বেপরোয়া আচরণ করার অভিযোগ তোলেন।
এদিকে পূর্বনির্ধারিত সোমবার (২৯ জুলাই) সকালে সদর উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা ও সমন্বয় কমিটির সভায় ওই জনপ্রতিনিধিরা ইউএনওকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গতকাল রবিবার রাতের ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ অন্য ইউপি চেয়ারম্যানরা। জানিয়েছেন, তারা সভায় অংশ নেবেন না।
অন্যদিকে ইউএনও জানিয়েছেন, তিনি যোগদানের পর থেকে মাঠ পর্যায়ে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজগুলো নিয়ম অনুযায়ী বুঝে নেওয়ার জন্য কাজ করছেন। এ জন্য ক্ষতিগ্রস্ত কেউ কেউ ষড়যন্ত্রও করতে পারেন। তার বিরুদ্ধে কমিশন দাবি ও খারাপ আচরণের অভিযোগ বায়বীয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন টিপু রাতে ২১ জন ইউপি চেয়ারম্যানকেই দাওয়াত করেছেন। এর মধ্যে ১৭ জন উপস্থিতি ছিলেন।
সেখানে ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ পাটওয়ারী ও ফরিদা ইয়াসমিন লিকাও ছিলেন। একে একে চেয়ারম্যানরা উপজেলা পরিষদ ও ইউএনওর বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেন। এ ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে শতকরা ১০-৩০ ভাগ কমিশন আদায়ের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি ও সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে অশোভনীয় আচরণ করার অভিযোগ তোলা হয়। পদে পদে হয়রানির কথা আসে।
সভায় উপস্থিত থাকা সদরের তিনজন ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অসুস্থতা, জরুরি কাজে এলাকায় না থাকায় অনুপস্থিত চার ইউপি চেয়ারম্যান ইউএনওর বিভিন্ন অভিযোগের আলোকে গৃহীত সিদ্ধান্তে আমাদের সঙ্গে একমত আছেন বলে মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন।
উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম বলেন, অনেক দিন পর আমরা এক হয়েছি। শুধু উপজেলার পরিষদের ভেতরে মসজিদে শুধু নামাজ পড়তে টাকা লাগে না। না হয় সব অফিসেই সেবা নিতে টাকা লাগে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, ইউএনওর কর্মকাণ্ডে ইউপি চেয়ারম্যানরা অতিষ্ঠ। তিনি আগের চেয়ে দ্বিগুণ কমিশন নেন। যার-তার সঙ্গে যেনতেন ব্যবহার করেন। আমরা উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা ও সমন্বয় কমিটির সভায় বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএনও বলেন, সভা করার বিষয়টি কেউ আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাননি। তবে কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, কেন উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের ডেকেছেন।