ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভয়াবহ খরার মুখে জিম্বাবুয়ে, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা

ভয়াবহ খরার মুখে জিম্বাবুয়ে, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা

আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়েতে বেশ কয়েক বছর ধরেই ভয়াবহ খরায় ভুগছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার।

এদিকে ক্ষুধা মোকাবিলায় বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন বলেও জানিয়েছে দেশটি। এছাড়া প্রতিবেশী জাম্বিয়া ও মালাউইও সম্প্রতি খরার কারণে রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের ঘোষণা দিয়েছে। অনেকের আশঙ্কা, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোতে চলমান এই খরা হবে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ।

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) বলেছে, ১ কোটি ৩৬ লাখ মানুষ বর্তমানে এই অঞ্চলে ‘সংকট স্তরের’ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, দীর্ঘস্থায়ী খরা মোকাবিলায় জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়া দেশটিতে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করেছেন।

গত বুধবার (৩ এপ্রিল) নানগাগওয়া বলেন, কম বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট খরা ও ক্ষুধা মোকাবিলায় জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ২০০ কোডি ডলার। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় দেশটির প্রায় অর্ধেক ফসল (ভুট্টা) নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

এতে শস্যের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় দেশটিতে খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে। এতে আনুমানিক ২৭ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য সংকট বা ক্ষুধার মুখোমুখি হবে। এই পরিস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট বলেন, জিম্বাবুয়ের সব নাগরিকের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। জিম্বাবুয়ের কোনো নাগরিককে ক্ষুধায় আত্মহত্যা করতে বা মরতে হবে না। জিম্বাবুয়ে অবশ্য এরই মধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশটি এখন আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পর্যাপ্ত পরিামণ ভুট্টা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, জিম্বাবুয়েকে একটা সময় আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের রুটির ঝুড়ি হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফসল ও গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি মারাত্মক খরার সম্মুখীন হয়েছে দেশটি। আফ্রিকার এই দেশটিতে সবচেয়ে খারাপ খরা ঘটেছিল ১৯৯২ সালে। সেসময় দেশটির গবাদি পশুর এক-চতুর্থাংশই মারা গিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ক্রমবর্ধমান শুষ্ক আবহাওয়া আবারও ফিরে এসেছে। এর আগে ২০১৬ সালে এবং এরপর ২০১৯ সালেও দেশটিতে খরা ঘোষণা করা হয়েছিল।

এছাড়া, শিল্প যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে পৃথিবীর তাপমাত্রা এরই মধ্যে প্রায় ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে ও বিশ্বের সব দেশ কার্বন নির্গমনের মাত্র ব্যাপকভাবে না কমালে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা আরও বাড়তে থাকবে। যদিও সব খরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হয় না, তবে বায়ুমণ্ডলে অতিরিক্ত তাপ পৃথিবী থেকে আরও বেশি আর্দ্রতা বের করে দেয় ও এতে করে খরা আরও বেশি খারাপ হয়ে ওঠে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি

সংবাদটি শেয়ার করুন