বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানিয়েছে, আগামী ১ জুন থেকে ঢাকার সড়কে কোনো রংচটা ও লক্কড়-ঝক্কড় বাস চলাচল করতে পারবে না। একই সঙ্গে রাজধানীর সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিকে নিয়ে অভিযান চালানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ ভবনে ‘ফিটনেসবিহীন, বায়ু দূষণকারী ও রুট পারমিটবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধকরণ সংক্রান্ত সভা’য় এই সিদ্ধান্ত হয়।
এদিন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সভাপতিত্বে এই সভায় অংশ নেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। সভায় নূর মোহাম্মদ মজুমদার পরিবহন মালিকদের উদ্দেশে বলেন, আগামী ৩১ মের পর ঢাকার রাস্তায় কোনো ধরনের রং ওঠা বাস চলতে দেওয়া হবে না। আমরা এর জন্য অভিযানে বের হব। আশা করব, মালিকেরা নিজ উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন বাস উপহার দেবেন। আমরা পুরো বিষয়টি মনিটর করব।
বিআরটিএ জানিয়েছে, রাজধানীতে ৩৯টি কোম্পানির ৫২৮টি ফিটনেসবিহীন গাড়ি ছিল। এর মধ্যে ২৫৭টি ঠিক করা হয়েছে। তবে এ তালিকা পূর্ণাঙ্গ আকারে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার তাগিদ রয়েছে বিআরটিএর। আগামী ৩০ মের মধ্যে ঢাকার সড়কে চলাচলকারী সব বাস-মিনিবাসের তালিকা ও মালিকদের নাম বিআরটিএতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ। তবে বাসমালিকেরা কথা দিয়েছেন, এপ্রিলের মধ্যে ২০ শতাংশ বাস রং করবেন। বাকিগুলো ধাপে ধাপে সম্পন্ন করবেন তাঁরা।
ঢাকার সড়কে এখন সাড়ে ৩ হাজার বাস-মিনিবাস যাত্রী পরিবহন করছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় কম উল্লেখ করে বৈঠকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলেন, এখন পুরোপুরি ফিটনেস ঠিক করা পর্যন্ত যদি ১ থেকে দেড় হাজার গাড়ি বসিয়ে রাখা হয়, তবে নগরে গণপরিবহন সংকট তীব্র হবে। মালিকদেরও ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হবে।
প্রসঙ্গত, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গত রোববার গণপরিবহনের কালো ধোঁয়া এবং উন্মুক্ত স্থানে নির্মাণসামগ্রী না রাখা এবং বায়োমাস বর্জ্য (আবর্জনা) পোড়ানো বন্ধের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, বায়ুদূষণ রোধে ২০ বছরের বেশি পুরোনো বাস রাজধানীতে চলতে দেওয়া হবে না। মন্ত্রী নির্দেশ দেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ৮ এপ্রিলের মধ্যে ঢাকা শহরে চলাচলকারী ২০ বছর বয়সী বাসের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। আর পরিবহন মালিক সমিতি ২০ এপ্রিলের মধ্যে ২০ বছরের বেশি বয়সী বাস তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া পুরোনো যানবাহন পুরোপুরি নিয়ম মেনে স্ক্র্যাপ করতে হবে।