বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও নিরাপদ পানির সমস্যা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, পৃথিবীতে প্রতি চারজনের একজন নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছেন। দেশের ৪১ শতাংশ মানুষ এখনো নিরাপদ পানি সুবিধা থেকে বঞ্চিত। উপকূল, পাহাড় ও হাওড়াঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি সংকট সবচেয়ে বেশি। তেমনই জনসংখ্যা বিস্ফোরণের কারণে রাজধানী ঢাকায় এ সমস্যা প্রকট।
বিশে^র অন্যতম এই মেগা সিটিতে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ ভাগের এক ভাগ মানুষের বসতি। এ শহরে সবকিছুই অনেকটা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। ধারাবাহিক উন্নয়নের মধ্যে নিরাপদ পানির কথা ভাবা হয়নি। উলটো টিউবওয়েল, কুয়া, পুকুর, খাল, বিল, নদী থেকে শুরু করে সব ধরনের জলাধারসহ প্রাকৃতিক পানির উৎসগুলো নির্বিচারে নষ্ট করা হয়েছে। পানি ধরে রাখার প্রায় সব উৎস ধ্বংস হওয়ায় সামনের দিনগুলোয় ঢাকার বিশুদ্ধ পানির সংকট আরও প্রকট হবে, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। একটি কথা মনে রাখা দরকার তা হলো, প্রকৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পরিণতি কখনোই সুখকর হয় না। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে, নদীর দেশে এখন জলের আকাল।
কংক্রিটের আবরণে ঢেকে গেছে রাজধানীর মাটি। শহরের বেশির ভাগ এলাকায় মাটির নিচে বৃষ্টির পানি প্রবেশের সুযোগ নেই। তাই একভাগ মানুষও সরাসরি বিশুদ্ধ পানি খেতে পারে না। পানির জন্য একমাত্র নির্ভরতা ঢাকা ওয়াসা। ওয়াসার পানিও ফুটিয়ে খেতে হচ্ছে। দিন দিন পানির স্তর নিচে নামছে। ওয়াসার গভীর নলকূপগুলোর কতদিন পানি উত্তোলনের সক্ষমতা থাকবে, এ নিয়ে গবেষণা ও প্রতিকারের ব্যবস্থা কী তা স্পষ্ট নয়।
রাজধানীতে বিশুদ্ধ পানির সংকট গরমে আরও তীব্র হয়। অনেক এলাকায় নিরাপদ পানির জন্য হাহাকার দেখা যায়। গবেষকরা বলছেন, ঢাকাকে ঘিরে থাকা নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করে পানির প্রবাহ বাড়ানো না গেলে ১৫ বছরের মধ্যে জলের অভাবে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে মহানগরী। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে এখনই সমন্বিত কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়ারও তাগিদ তাদের। তাছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকার মতো ঢাকায়ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুতগতিতে নিচে নেমে যাচ্ছে। ১৯৭০ সালে ৪৯টি গভীর নলকূপ ছিল ঢাকা মহানগরীতে। এখন ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় সুপেয় পানির চাহিদার শতকরা ৭৮ ভাগ গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ থেকে উত্তোলন করছে ওয়াসা। এতে ৯০০টি নলকূপ ব্যবহার হচ্ছে। নদীর পানি দূষণের অজুহাতে ওয়াসা একের পর এক নলকূপ বসিয়ে যাচ্ছে। অথচ নদীর পানিদূষণ রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেই।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজধানীতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর ১০ ফুট নিচে নেমে যাচ্ছে। অপরদিকে মনুষ্য বর্জ্য ও শিল্পকারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে। এতে বাড়ছে নদীদূষণের মাত্রা। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে লবণাক্ত পানি উজানে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী দূষণমুক্ত ও পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি করা না হলে সামনের দিনগুলোয় নগরবাসীর বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পূরণের চ্যালেঞ্জ মারাত্মক আকার ধারণ করবে।
রাজধানীর বাইরে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ হাজার ২৭২টি কূপের মাধ্যমে দেশের ভূগর্ভস্থ পানির বাড়া-কমা পর্যবেক্ষণ করে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকায় ১৯৯০ সালে ১৩০টি গভীর নলকূপ দিয়ে পানি উত্তোলন করা হতো। তখন সাড়ে ২২ মিটার নিচ থেকে পানি পাওয়া যেত। ২০২০ সালে এসে নলকূপের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। আর পানির স্তর নেমেছে ৭৪ মিটার।
অন্যদিকে কৃষিতে সেচের কাজে পানির ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) হিসাব অনুযায়ী, দেশের প্রায় ৫৫ লাখ হেক্টর জমি সেচের আওতায় রয়েছে। বোরো মৌসুমে সেচের পানির প্রায় ৭৫ ভাগের উৎস ভূগর্ভস্থ পানি। দেখা যাচ্ছে, সেচের জন্য ১৯৮৫ সালে দেশে নলকূপের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮০০টি। ২০১৯ সালে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ। বরেন্দ্র অঞ্চলে এখন পানির স্তর প্রতিবছর নামছে এক ফুট করে। এক দশক আগে গড় নামার হার ছিল আধা ফুট। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রক্ষার ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা ওয়াসার ৭০ ভাগ পানি ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে নেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। জানি না লক্ষ্য পূরণে প্রতিষ্ঠানটি কতদূর এগিয়েছে।
দেশে পানি আইন ২০১৩ বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালে বিধিমালা প্রণয়ন হয়। বিধিমালা অনুযায়ী, গৃহস্থালি ব্যবহার ছাড়া ভূগর্ভস্থ পানির উত্তোলনে লাইসেন্স প্রদান, মনিটর করে যথেচ্ছ উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হলো ওয়ারপো। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ওয়ারপোর কাজ দৃশ্যমান নয়।
এমনিতেই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমছে। প্রাকৃতিক উৎস অর্থাৎ বৃষ্টির পানির পরিমাণ কমে যাওয়া সবচেয়ে বড়ো চিন্তার বিষয়। যদিও কিছু কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ওপর বেশ কিছুদিন ধরেই জোর দিচ্ছে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) ৬ অনুসারে ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষের কাছে নিরাপদ পানি পৌঁছাতে হবে। কিন্তু দেশে নিরাপদ পানি পৌঁছানো গেছে ৫৯ শতাংশ মানুষের কাছে। দুর্গম এলাকা, গ্রামাঞ্চল ও শহরের বস্তি এলাকায় নিরাপদ পানি সহজে পাওয়া যায় না। পানিতে জীবাণু, আর্সেনিক ও লবণাক্ততা রয়েছে। এসডিজি লক্ষ্য পূরণ করতে হলে নিরাপদ পানির জন্য এখন কমপক্ষে চারগুণ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এদিকে জরুরি ভিত্তিতে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশের ৯৮-৯৯ শতাংশ মানুষ সাধারণভাবে পানির সুবিধা পেলেও গুণগত মানসম্পন্ন নিরাপদ পানি এখনো সবার জন্য নিশ্চিত করা যায়নি। পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে, এটি একটি সমস্যা। ঢাকায় ঘনবসতি বলে সমস্যা বেশি। পানি শোধনাগার যা আছে, তা যথেষ্ট নয়। তবে সরকার এসডিজি লক্ষ্য পূরণের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা বাড়াতে আগের চেয়ে বাজেট অনেক বাড়ানো হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হচ্ছে, পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী পানি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্যোগের অংশ হিসাবে রাজধানীতে ভূগর্ভস্থ পানির উৎসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ভূ-উপরিস্থ উৎসের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে বৃহৎ তিনটি পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ৭০ ভাগ ভূ-উপরিস্থ পানি আর ৩০ ভাগ ভূ-গর্ভস্থ পানির উৎসের ওপর নির্ভরতা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া রাজধানীতে নিরাপদ ও ‘প্রেশারাইজড’ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে নতুন ‘ট্রেঞ্চলেস’ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যমান পানির লাইন পরিবর্তন করে আধুনিক পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
রাজধানীবাসীর নিরাপদ পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরেকটি বড়ো প্রতিবন্ধকতা হলো বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে যাওয়া বর্জ্য, যা ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করে তুলতে পারে। এমন আশঙ্কার কথা মাথায় নিয়ে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) একটি গবেষণা করছে। তারা বলছে, অপরিকল্পিতভাবে কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেললে বর্জ্য স্তূপ করে রাখার ফলে ভয়ংকর দূষণের ঘটনা ঘটতে পারে। রাজধানীর বর্জ্যে ৬২ রকম ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া গেছে বলেও প্রতিষ্ঠানটির দাবি।
অব্যবস্থাপনার কারণে যদি এসব পদার্থ ভূগর্ভস্থ পানির সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে তা পানযোগ্য পানির ক্ষেত্রে মারাত্মক বিপর্যয় বয়ে আনবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃষ্টির পানি স্তূপ করা বর্জ্যরে সঙ্গে মিশে গেলে সেই দূষিত পানিকে ‘লিচেট’ বলে। এ পানি পান করলে মানুষ রোগাক্রান্ত হতে পারে।
বায়ুমণ্ডলে অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণের কারণে ক্রমাগত বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, দ্রুত জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। এর বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশেও ক্রমশ সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে পরিবেশ-প্রকৃতি। সম্প্রতি বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, হঠাৎ অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, সামুদ্রিক ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে দেশের জনজীবন, কৃষি, ভৌত অবকাঠামো বিপর্যস্ত হচ্ছে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে অধিক ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এমনই অবস্থায় পানি সংকট থেকে পরিত্রাণে ভূপৃষ্ঠের তথা ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারে বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, পুকুর, জলাশয়, নদী-খাল সংস্কার, ঢাকা ওয়াসাসহ সব নগরীতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নদী বা জলাশয়ের পানি ব্যবহারের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব পানি ব্যবস্থাপনায় চাষাবাদ পদ্ধতির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে এবং সোককূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানির উন্নয়নের পদক্ষেপ নিতে হবে।
জলাধার রক্ষায় পানি আইনের কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে ভূপৃষ্ঠের পানি ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবহারের জন্য বাধ্য করা এবং নাগরিকদের মধ্যে পানির অপচয় রোধসহ পানির ব্যবহারে সচেতনতায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
অন্যদিকে ড্রেজিং করে নদীর নাব্য বৃদ্ধি করা এবং অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যাপ্রাপ্তির লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। ঢাকার খালগুলো ফিরিয়ে দেওয়া এবং নদীগুলো খনন করে পানি প্রবাহ বাড়ানোর বিকল্প নেই। খরা মৌসুমে সেচ ও রাসায়নিক সারনির্ভর ধানচাষের পরিবর্তে প্রকৃতিনির্ভর ধানচাষের উদ্যোগ নেওয়া। অপরিশোধিত শিল্পকারখানায় বর্জ্য ও পয়ঃবর্জ্য, নৌযানের বর্জ্য, কঠিন বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ করা। ঢাকার আশপাশের নদীসহ অন্যান্য সব নদী ও জলাশয় দখল, ভরাট এবং দূষণরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। নদী দূষণমুক্ত করা। একই সঙ্গে নদীর পানি পরিশোধন করে সুপেয় পানি হিসাবে ব্যবহার করা।
জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রণীত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের ৬ নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে: ‘নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন: পরিকল্পিত পানির উৎস সংরক্ষণ ও দক্ষ পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমাজের সবার জন্য, বিশেষ করে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুপেয় পানি ও পয়ঃব্যবস্থা নিশ্চিত করা।’ ২০৫০ সাল নাগাদ দেশের জনসংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য নগরায়ণ ও শিল্পায়ন আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। এতে পানি, বায়ু ও মাটির দূষণ বৃদ্ধি পেয়ে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হিসাবে দেখা দিচ্ছে।
দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬০টিতে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৩৪ বর্গকিলোমিটার এলাকার পানি আর্সেনিক দূষণের শিকার হয়। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় এ সমস্যা প্রকট। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার প্রায় ২৫ লাখ মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে ভুগছে। ২০৫০ সাল নাগাদ ওই অঞ্চলের ৫২ লাখ দরিদ্র ও ৩২ লাখ চরম দারিদ্র্য পানি সংকটের সম্মুখীন হবে। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রাম ও শহর এলাকার সব মানুষের জন্য নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহের অঙ্গীকারবদ্ধ। মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে নিরাপদ পানির বিষয়টি যুক্ত না থাকলেও সামনের দিনগুলোয় আশা করি তা যুক্ত হবে। কারণ, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিরাপদ পানির বিকল্প নেই।
এজন্য ঢাকার চারপাশ ঘিরে থাকা নদীগুলোর পানি ঘরের কাজে ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে সবার আগে। যে কোনো মূল্যে জলাশয় ভরাট বন্ধের বিকল্প নেই। পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষের অন্যতম দুঃখ নিরাপদ পানির সংস্থান খুবই জরুরি। ২০২৪ সালের শুরুতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। আশা করি আবারও ২০২৯ সালে নতুন সরকার দেশে আসবে। এর মধ্যে বড়ো রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি হওয়া উচিত সবার জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা। আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে এই সময়ে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সবার জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে পারা কঠিন কিছু নয়।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট