বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কবলে বরগুনার পাথরঘাটার আড়াইশো জেলে উদ্ধার হলেও তিন দিন ধরে ট্রলারসহ নিখোঁজ রয়েছেন ১৭ জন জেলে। এফবি এলাহী ভরসা নামের ওই মাছ ধরার ট্রলারটিতে মাঝি-মাল্লা হিসেবে তারা সাগরে গিয়েছিলেন।
১৯ নভেম্বর (রোববার) বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এফবি এলাহী ভরসা ট্রলারের মালিক মোহাম্মদ রফিক। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ট্রলারের মাঝি-মাল্লাদের সঙ্গে রফিকের যোগাযোগ ছিল।
বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় গভীর সমুদ্র থেকে ট্রলার নিয়ে ঘাটের দিকে ফিরছিলেন আওয়াল মাঝি বিষয়টি উল্লেখ করে বরগুনা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেন মাস্টার নিখোঁজ জেলেদের স্বজনদের বরাতে জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নেটওয়ার্কের মধ্যে এসে জেলেরা স্বজনদের জানান, আবহাওয়া খারাপ থাকায় পাথরঘাটা থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ট্রলারটি নোঙর করেছেন তারা। আবহাওয়া ভালো হলে ঘাটের দিকে রওনা দেবেন। কিন্তু এর কিছু পর থেকে তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
ট্রলারসহ নিখোঁজ জেলেরা হলেন—ট্রলারের মাঝি হারুন বিশ্বাসের ছেলে আউয়াল বিশ্বাস (৪৮), শাহজাহান মিয়ার ছেলে সফিকুল ইসলাম (৪০), সেকান্দার হাওলাদারের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক (৩৫), মেনাজ উদ্দিন বয়াতীর ছেলে আব্দুল খালেক (৫০), মোহাম্মদ শাহ আলম খানের ছেলে মোহাম্মদ নান্টু খান (৩৫), আব্দুল মজিদের ছেলে মাহতাব (৪৫), পনু মৃধার ছেলে সিদ্দিক মৃধা (৪৩), সফেজ উদ্দিনের ছেলে কালু মিয়া (৪০), আব্দুল ছত্তার আকনের ছেলে মোহাম্মদ মনির হোসেন (৪৫), জেন্নাত আলীর ছেলে সহিদুল ইসলাম (৪০), মৃত চান মিয়া সুবাহান খাঁ (৭১), ওহাব আলীর ছেলে মো. ইউনুস সর্দার (৭৩), মৃত ছয়জুদ্দিনের ছেলে মো. খলিল (৬১), মো. আমজাদের ছেলে আব্দুর রব (৬০), হারুন বিশ্বাসের ছেলে আল আমিন বিশ্বাস (৩৫), মো. আঃ জব্বারের ছেলে লিটন (৪১), আঃ সালামের ছেলে আবুল কালাম (৩৬)। এদের বাড়ি বরগুনা সদর ও পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকাররত অবস্থায় অনেক ট্রলার ডুবে গেছে উল্লেখ করে ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যে ডুবে যাওয়া ট্রলারের মাঝি-মাল্লারা বিভিন্নভাবে উদ্ধার হয়েছেন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের তিন দিন পার হলেও এফবি এলাহী ভরসা ট্রলারসহ ১৭ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। ইতিমধ্যে নিখোঁজ ট্রলারের সন্ধানে একটি ট্রলার সাগরে পাঠানো হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান এ বিষয়ে বলেন, নিখোঁজ ট্রলার ও জেলেদের উদ্ধারের জন্য উপজেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ এবং ট্রলার মালিক সমিতির যৌথ উদ্ধার তৎপরতা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।