উপকূল দিবস ঘোষণার দাবিতে উপকূল ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার (১২ নভেম্বর) সকাল এগারটায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপকূল গবেষক ও উপকূল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম আমীরুল হক পারভেজ চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘উপকূল দিবস’ ঘোষণা আসন্ন নির্বাচনী ইশতিহারে রাখার দাবি জোর জানান।
তিনি বলেন, উপকূলের কোটি কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত বহুমুখী দুর্যোগের সঙ্গে বাস করেন। ঝড়-ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ এক জনপদের নামই উপকূল। বৈরী প্রতিকূলতা, জলোচ্ছ্বাস, নদী-ভাঙন, লবণাক্ততার প্রভাব উপকূলের শ্রমজীবী মানুষের নিত্য সঙ্গী।
তিনি ৭০এর ঘূর্ণিঝড় পূর্ববঙ্গের মানুষের ভাগ্য বদলের অন্যতম নিয়ামক উল্লেখ করে বলেন ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ বপন করলেও শেষে পেরেক ঢুকে দিয়ে ছিল ঘূর্ণিঝড়। ঐতিহাসিকভাবে ’৫২ আর ভয়াল ’৭০ বাংলাদেশ সৃষ্টির শুরু-শেষে অতপ্রতভাবে জড়িত। ’৫২ যেমন আমাদের ‘ভাষা দিবস’ ও পৃথিবীর মানুষ হিসেবে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পেয়েছি; তেমন ’৭০ এর ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ে ‘উপকূল দিবস’ ও পৃথিবীর মানুষ হিসেবে ‘বিশ্ব উপকূল দিবস’ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ভৌগোলিক অবস্থান ও পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ বদ্বীপ হিসেবেও আমরা (বাংলাদেশ) দাবিদার।
অভিনেতা ও পরিচালক কিরণ খান বলেন, সত্তুরের ঘূর্ণিঝড়ে ১৫ থেকে ২৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল ও দ্বীপগুলো প্লাবিত হয়ে ১০ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘূর্ণিঝড়টিকে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থাও (ডব্লিউএমও)৷ উল্লেখ করেছে।
বদ্বীপ ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী মীর মোশারেফ অমি, এডভোকেট আব্দুল বাসেত শামীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বেচ্ছাসেবী ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, ওসমান গণি, আদনানসহ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
মানব বন্ধনে বক্তরা ভয়াল ১২ নভেম্বরের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ভোলা, পটুয়াখালী, রামগতি, হাতিয়া, সন্দ্বীপসহ উপকূলের ১০ লক্ষ মানুষের নির্মম প্রাণহানির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনে নতুন নতুন দুর্যোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তুলতে একটি বিশেষ দিবসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জোর দাবি জানান।