প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্দেশে বলেন, ‘আরে ব্যাটা তোর যদি সাহস থাকে তাহলে বাংলাদেশে ফিরে আয়, আমরা একটু দেখি।’
রোববার (১২ নভেম্বর) নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়া জেলে। আমি দয়া করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি, আমার ক্ষমতাবলে। তাঁর ছেলে তারেক জিয়া, রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে লন্ডন গিয়ে বসে আছে। এত টাকা কোথা থেকে পায়? জনগণের টাকা আত্মসাৎ করেছে। পালিয়ে থাকে লন্ডনে। ওখান থেকে আগুন জ্বালাতে বলে। আরে ব্যাটা তোর যদি সাহস থাকে তাহলে বাংলাদেশে ফিরে আয়, আমরা একটু দেখি।’
শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নে সরকারের কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি খালেদা জিয়া বা এরা (বিএনপি) চায় না এদেশে শিক্ষা হোক। এরা যদি চাইতো আজকে নভেম্বর মাসে পরীক্ষার সময় আর সামনে নির্বাচন, আগেভাবে পরীক্ষা দেবে। সেই ব্যবস্থা যখন নিচ্ছে তখন বিএনপি দেয় অবরোধ, হরতাল, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারে। সামনে আসার সাহস নাই। এখন তারা কোন গলি থেকে বের হয়ে বিভিন্নভাবে বাসের ভেতরে, স্কুটারে, অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিচ্ছে, মানুষ পোড়াচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা বন্ধ করে অবরোধ করে তারা কি করতে পারবে? সরকার হটাবে। কীভাবে সরকার হটাবে? চোরাগোপ্তা মেরে সরকার হটানো যায় না। মানুষ যদি সঙ্গে না থাকে তাহলে আন্দোলন হয় না। বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসীদের দল, জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল। তাদের কথা এ দেশের মানুষ শোনে না। তাদের কিছু লোক আছে, তারাই নাচানাচি করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশকে যেভাবে প্রকাশ্য পিটিয়ে হত্যা করেছে (বিএনপি), এটাতো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন তারা করে যাচ্ছে। বিএনপির অগ্নি সন্ত্রাস যুগ যুগ ধরে মানুষ দেখেছে। এসময় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আপনারা দেখেছেন কীভাবে ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনের হাসপাতালে বোমা মেরে নারী ও শিশু হত্যা করেছে। খালেদা জিয়া-তারেক জিয়ার চ্যালা-বেলারা অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার ওপর আক্রমণ করেছে। তাহলে ওরা ইসরায়েলের জারজ সন্তান কি না সেটাই আমার প্রশ্ন। ওরাতো তাদের কথাই মানতেছে। শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের আহ্বান করব অগ্নি সন্ত্রাসীদের যাকে যেখানে পাবেন আগে তাকে ধরেন। কেউ যদি ওরকম অগ্নি সন্ত্রাস, বাসে আগুন দিতে যায়, ওগুলোকে ধরে আগে ওই আগুনে ফেলে দেবেন। তাহলে যদি ওদের শিক্ষা হয়। না হয় শিক্ষা হবে না। দুই একটা চোরাগোপ্তা হামলা করে মানুষ মেরে ওরা এ দেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।
এসময় জনগণকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া, পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছে। তাহলে তাদের আপত্তিটা কোথায়? গত ১৪ বছরে শ্রমিকদের বেতন ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আমার পরিবার। সেই অনুযায়ী আপনাদের জন্য কাজ করছি। আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবার সেবা করার সুযোগ দেবেন কি না? আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা হাত তুলে সমর্থন জানান। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। অগ্নি সন্ত্রাসী, খুনি এরা যেন আর কখনো বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের জন্য আমি যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। প্রয়োজনে বাবার মতো, মায়ের মতো নিজের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েও বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করব।