ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেড়ায় মৃদুলা স্পেশালাইজড হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

বেড়ায় মৃদুলা স্পেশালাইজড হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

পাবনা বেড়ার মৃদুলা স্পেশালাইজড নামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।ভুক্তভুগী এক ব্যাক্তি ঔষুধ প্রশাসন,সিভিল সার্জন, ভোক্তা অধিদপ্তর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, মৃদুলা হসপিটালের নিয়মিত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ বেশ কিছু পরিক্ষা করে ঔষুধ লেখেন এবং চেম্বার থেকে বলে দেয়া হয় এই ঔষুধগুলো বাহিরে কোথাও পাবেন না। একমাত্র হাসপাতালের ফার্মেসীতেই পাওয়া যাবে। যা ভারতীয় ঔষুধ, কোন ঔষুধের কাভারের উপর ভারতীয় মূল্য থাকে না। শুধু সাদা স্টিকার লাগানো বাংলাদেশি মূল্য দেওয়া থাকে। যেমন কেটনিক্স,জুলিকন, ফ্লাকজোল ঔষুধ বেশি লেখেন।

এতে প্রতিটি রোগীর ঔষুধের দাম নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। প্রকৃত পক্ষেই ঐ ডাক্তারের লেখা ঔষুধ আর কোন ফার্মেসীতেই পাওয়া যায় না। এক একটা ঔষুধের মূল্য চারশ থেকে ছয়শ টাকা।ঐ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া একাধিক রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ এর দেখা প্রতিটি রোগীদের তিনটি করে একই ঔষুধ লেখেন যা মৃদুলার নিজস্ব ফার্মেসী ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যায় না। কারণ ছাড়াই যে কোন রোগীদের একাধিক টেস্ট দিয়ে থাকেন যাতে সাধারণ রোগীদের জন্য অনেক টাকা খরচ করে টেস্ট করানো কষ্টকর হয়ে যায়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,বেড়া পৌর এলাকার আলহেরা নগর এলাকার প্রবেশ পথে রয়েছে বিশাল আকারের গেট সেখানে লেখা মৃদুলা স্পেশালাইজড হাসপাতাল এন্ড ট্রমা সেন্টার। দুই পাশে টানানো আছে চটকার রং বেরংগের সাইনবোড। টানানো আছে প্রস্তাবিত মৃদুলা চক্ষু হাসপাতাল ও প্রস্তাবিত মৃদুলা নার্সিং কলেজ। খোঁজ নিয়ে এখানে একজন ডাক্তার এফ.সি.পি.এস ডিগ্রি অর্জন না করেও তার চিকিৎসা সনদে এই ডিগ্রি লিখে রোগীদের সাথে করছে প্রতারণা।

ভুক্তভুগি নজরুল ইসলাম নামের এক রোগী জানান, আমি একবছর ধরে ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ এর কাছ থেকে চিকৎিসা নিচ্ছি। প্রায় ৮০-৯০ হাজার টাকার ঔষুধ খেয়েছি আমার রোগ এখনো ভালো হয়নি। লেখে অনেক দামী ঔষুধ।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন,আমার প্রতিষ্ঠানে কারণ ছাড়া কোন রোগীকে টেস্ট দেয়া হয় না। এবং কোন রকম দূর্নীতি হয় না। ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ এর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।

অভিযুক্ত ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ জানান,আমি যেসকল ঔষধ লিখি তা বিএসটিআই অনুমোদিত এবং তাদেরই মূল্য নির্ধারণ করা। প্রতিটি রোগীকে একই ঔষুধ লেখার বিষয়ে তিনি জানান,আমি ওমেগা-৩ ঔষুধ একটু বেশি লিখি কারন এটা ভিটামিন জাতীয় ঔষুধ।

পাবনা সিভিল সার্জন ডাঃ মনিসর চৌধুরী জানান, বেড়ার মৃদুলা প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা.সবুর আলী বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি সত্যতা পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ এর ভিত্তিতে ঐই এলাকার দুইটি ক্লিনিক ৩১ আগস্ট লোক দেখানো পরিদর্শন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফাতেমা তুয জান্নাত।

মৃদুলা স্পেশালাইজড হাসপাতালের দেওয়া বিজ্ঞাপন ব্যানার থেকে জানা যায় প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডা.ফাতেমা ঐই হাসপাতালে রোগী দেখেন।এখন প্রশ্ন থেকে যায় ডাক্তার ফাতেমা যেখানে প্রতিদিন রোগে দেখেন সেখানে এমন অনিয়ম কিভাবে করে হতে পারে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন