অ্যাকাউন্টে ৫০ লাখ টাকা। সেখান থেকে বড় মেয়ে ৩০ লাখ টাকা কৌশলে তুলে ফেলেছেন এমন অভিযোগ তুলে তার স্ত্রী এবং সন্তানেরা মরদেহ দাফনে বাধা দেয়। উঠানের এককোণে লাশবাহী গাড়িতে পড়ে থাকে সরকারি কর্মকর্তার মরদেহ।
লাশবাহী গাড়ির পাশেই সালিশ বসিয়ে চলতে থাকে ভাগ-বাঁটোয়ারা। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ, প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাদের হস্তক্ষেপে মৃত্যুর প্রায় ৩৮ ঘণ্টার পর দাফন করা হয় মরদেহটি। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়ন এলাকার মারা যাওয়া ওই সরকারি কর্মকর্তার নাম মনির আহমদ। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে তার মরদেহ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মনির আহমদ পদ্মা অয়েলে চাকরি করতেন। তার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। তারা হলেন জাহাঙ্গীর আলম, আলমগীর, বেবি আক্তার, লিপি আক্তার ও জোছনা আক্তার। ছেলেদের মধ্যে আলমগীর প্রবাসে থাকেন এবং জাহাঙ্গীর আলম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বলে জানা গেছে।
চাকরি জীবন শেষ করে কয়েক বছর আগে মনির আহমদ অবসর নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। গত (শনিবার) দিবাগত রাত সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তার স্ত্রী এবং সন্তানেরা ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার হিসাব-নিকাশ শুরু করে। পরিবারের কয়েকজন সদস্যের দাবি, মৃতের বড় মেয়ে বেবী আক্তার চিকিৎসার কথা বলে কৌশলে তার বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০ লাখ টাকা তুলে ফেলেন। এই টাকার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী এবং ছেলেরা মরদেহ দাফন করতে দিচ্ছে না।
স্ত্রী এবং সন্তানদের বুঝিয়ে সোমবার সকালে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তার আগে সিদ্ধান্ত হয়েছে মৃতের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যা টাকা আছে সবাইকে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে বলে জানান স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম। তিনি বলেন, মনির আহমদের ছেলেরা তার বাবার চিকিৎসার খোঁজ নিতো না। মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি থেকে এসে বাবাকে চিকিৎসা করাতেন। ব্যয়বহুল চিকিৎসা করাতে মনির আহমেদের পেছনে অনেক টাকা খরচ হতো। এসব টাকা মেয়েরা তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিতো। ছেলেদের ধারণা ছিল, তাদের বাবার চিকিৎসার খরচের চেয়ে মেয়েরা বেশি টাকা তুলে ফেলেছে। এজন্য ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
আনন্দবাজার/কআ