বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গভীর রাতে ঢাবিতে ফুটবল উন্মাদনা

ভুভুজেলায় পড়া-ঘুম নষ্ট

ভুভুজেলায় পড়া-ঘুম নষ্ট

গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বসানো হয়েছে বড় পর্দার স্ক্রিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি (শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র) এলাকায় ২টি এবং হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠে একটি স্ক্রিন বসানো হয়েছে। এছাড়াও, বিভিন্ন আবাসিক হলগুলোতেও টাঙানো হয়েছে পর্দা। এগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শক বিশ্বকাপ ফুটবল উপভোগ করেন। তবে যেদিন আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের ম্যাচ থাকে সেদিন বেড়ে যায় দর্শকের আগমন। যা প্রভাব ফেলেছে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে।

বিশেষ করে ৪টি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপাকে। টিএসসির পাশে বেগম রোকেয়া ও শামসুন্নাহার হল এবং হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠের পাশে স্যার এ. এফ রহমান ও স্বয়ং মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা এ ভোগান্তিতে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিপুল পরিমান জনসমাগমের কারনে বেড়ে যায় যানজট ও শব্দদূষণ। যে কারণে একদিকে যেমন ঘুমানো যায় না, অন্যদিকে পড়াশোনাতেও মনোযোগ ধরে রাখা যায় না।

এছাড়াও দর্শকের সাথে করে নিয়ে আসা ভুভুজেলার বিকট শব্দ, আতশবাজির শব্দ বিশ্ববিদ্যালেয়র একাডেমিক শৃঙ্খলার পরিপন্থি এবং দেশসেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও বেগম রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী বুশরা জাহান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপে লিখেন, কি শুরু হয়েছে….! আমরা তো মানুষ! সকালে পরীক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়ে কি রঙ্গ তামাশা করতে এসেছি; না পড়াশোনা?

মারিয়াম মৌরি বলেন, রাত বিরাতে বাঁশি বন্ধ করার কি কোনো উপায় নেই? স্টুডেন্টদের পরীক্ষা থাকে। এদের জন্য না পড়াশোনা করা যাচ্ছে, না ঘুমানো যাচ্ছে। পাশে মেয়েদের হল। কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই কারো! প্লিজ দোহাই লাগে,বন্ধ করেন এসব। মাথা ব্যথায় মরে যাচ্ছে অনেকে।

আরও পড়ুনঃ  চাহিদা মেটাতে আসছে তেল

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. এনামুল হক বলেন, কি আর বলব! যে দিন আর্জেনটিনা বা ব্রাজিলের খেলা রাত ১টায় থাকে, সেদিন চিল্লানিতে ঘুম ভেঙে যায়। কোনো খেলাধুলা না দেখেও এগুলো সাফার করতে হয়। রাফিদ রাফি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয় না। এটি মজা নেয়ার জায়গা! ছা, ছপ, ছমুসা, ছিঙ্গারা খাওয়ার জায়গা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা অলরেডি বলে দিয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য এসবের আয়োজন করা হয়েছে, ছাত্র সংগঠন করেছে। গভীর রাতে আমরা এখানে বহিরাগত কাউকে আশা করি না।

প্রক্টর জানান, এখানে খেলা দেখতে শিক্ষার্থীদেরও আগ্রহ আছে; এ কারণে সমন্বয় করতে হবে, শব্দটা যেন সহনশীলতার বাইরে না যায়। তিনি আরও বলেন, উচ্চমাত্রার একটা শব্দ দূষণের কথা এসেছে। যারা অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে আছে তাদের কে আমি বলেছি সীমিত শব্দের ব্যাপারে। এসময় তিনি যার যার অবস্থান থেকে নিরাপদে সবাইকে খেলা দেখার আহ্বান জানান এবং বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে না আসার জন্য অনুরোধ করেন।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন