ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মন্দাতেও ক্রেতার চাপ

পুঁজিবাজার
  • সব ধরনের সূচক উত্থান
  • লেনদেন ৩৩৪ কোটি টাকা

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মঙ্গলবার সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন লেনদেন পরিমাণ কমেছে। লেনদেন কমে ৩৩৪ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করেছে। এসময় বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতার পরিমাণ বেড়েছে। বেড়েছে বিক্রেতার সাড়ে চারগুন ক্রেতা।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, গতকাল মঙ্গলবারও ফ্লোর প্রাইজের কারণে দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে। অবশ্য ক্রেতার চাপ বেশি ছিল। ক্রেতার চাপের একই অবস্থা ছিল অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। এদিকে ফ্লোর প্রাইজ যেনো বাঁচাতে পারছে না পুঁজিবাজারকে। ফলে মন্দা লেনদেন থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা খুঁজে পাচ্ছেনা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আ্যন্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। চলতি বছরের ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস অর্থ্যাৎ শেয়ার দর কমার সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারন করে দেয়। এরপরে কিছুদিন পুঁজিবাজার ভালো থাকলেও পরবর্তীতে মন্দা ফিরে আসে। হাজার কোটি টাকার লেনদেন বর্তমানে ৩শ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে।

মন্দা লেনদেন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ফ্লোর প্রাইস কখনোই ভালো পদ্ধতি না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার দাবি করেন তিনি।

স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র মতে, গতকাল ডিএসইতে ৩৩৪ কোটি ৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস গত সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২১২ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৯ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৪ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২০০ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৫৯ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৬৩টি এবং কমেছে ১৪টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ২৪০টির। এদিন ডিএসইতে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন জেনেক্স ইনফোসিস ২২ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে নাভানা ফার্মা ১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, সী পার্ল বিচ ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকা, আমরা নেট ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা এবং পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

অপরদিকে, সিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবস গত সোমবার ৭ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৩৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ২৮টি, কমেছে ২৬টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৮২টির।

এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১০ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩১৮ দশমিক ৯১ পয়েন্টে। সিএসই-৩০ সূচক ২৩ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স সূচক ৬ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩ হাজার ২০৬ দশমিক ৬৫ পয়েন্টে এবং ১০ হাজার ৯৭৫ দশমিক ১১ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ৫৮ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২০ দশমিক ৫২ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৫৫ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে ।

এদিন সিএসইতে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা, সী পার্ল বিচ ৯৫ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ৪০ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফিফোসিক ২৪ লাখ টাকা, আমান কর্টন ২২ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ১৮ লাখ টাকা, আফতাব অটো ১৫ লাখ টাকা, নাভানা ফার্মা ১৪ লাখ টাকা এবং ওরিয়ন ফার্মা ১৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন