লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজের ওপর দিয়ে উঁকি দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। ভোর ছয়টা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা মেলে। উত্তরের আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘা সবার নজর কাড়ছে। সময় যতই বাড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা সোনালি আকার ধারণ করছেন। পরে রোদ্দুর উজ্জলে মিশে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
সোমবার ভোর ৬টায় থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজের ওপর দিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন বিকেলে ও সূর্য অস্তের সঙ্গে সঙ্গে দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা ব্যারাজের উত্তরের আকাশে মেঘ না থাকায় ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা চোখে পড়ে। সকালে তিস্তা ব্যারাজ এলাকার লোক সমাগম কম হলেও কয়েকজন মোবাইল ফোনে তুলছে কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবি। তিস্তা ব্যারাজ দিয়ে নদী পারাপার হলেই চোখে পড়বে কাঞ্চনজঙ্ঘার স্পষ্ট ছবি। তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা প্রতিদিন এই কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করেন। তিস্তা ব্যারাজ থেকে উত্তরের কাঞ্চনজঙ্ঘা সহ ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড় চোখে পড়ে।
জানা গেছে, উত্তর জনপদে শীত নামার শুরুতেই আকাশ পরিষ্কার থাকলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলা বিভিন্ন স্থান দিয়ে প্রতিবছর কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা মেলে। বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ শ্বেতশুভ্র পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা উঁকি দিয়েছে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায়।
ভারতের সিকিম রাজ্যের সঙ্গে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে অবস্থিত পর্বতশৃঙ্গটি। প্রতিবছর শীত নামার আগে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মহানন্দা নদীর তীর থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যায় পর্বতশৃঙ্গটি। কাঞ্চনজঙ্ঘার নান্দনিক দৃশ্য উপভোগ করতে কেউ যাচ্ছে ভারতের দার্জিলিকে আবার কেউ ছুটে আসছে পঞ্চগড়ে।
স্থানীয় সীমান্ত বাজারের মামুন মিয়া বলেন, তিস্তা ব্যারাজ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাবে এটা আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি। আজ নিজ চোখের কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখলাম। আজ কুয়াশা না থাকায় আমরা খুব স্পষ্টভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখলাম। পর্বতশৃঙ্গটির অপরূপ সৌন্দর্য আমাদের তিস্তা ব্যারাজ থেকেই উপভোগ করছি।
ঢাকা থেকে তিস্তা ব্যারাজের ঘুরতে আসা রূপালী ব্যাংকের অডিট কর্মকর্তা শাহীন মাহামুদ বলেন, নীলফামারী ডালিয়া শাখা রূপালী ব্যাংকের অডিট এসেছি আজ সকালবেলা তিস্তা ব্যারাজে ঘুরতে এসে কাঞ্চনজঙ্ঘা চোখে পড়ে। আমি জানতাম কাঞ্চনজঙ্ঘা শুধু পঞ্চগড় থেকে দেখাযায়। তিস্তা ব্যারাজ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে অবাক হয়েছি অনেক আনন্দ পেয়েছি।
যশোর থেকে ঘুরতে আসা এনামুল হক ও আশরাফুল ইসলাম কে বলেন, কয়েকদিনের জন্য দুই বন্ধু মিলে উত্তর অঞ্চলের কয়েকটি জেলায় ঘুরতে এসে তিস্তা ব্যারাজ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে খুবই আনন্দিত। তারা আরো বলেন, ভারত কিংবা নেপালের না গিয়ে তিস্তা ব্যারাজ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে অবাক হয়েছি।
হাতীবান্ধা দোয়ানি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুর আলম বলেন,তিস্তা ব্যারাজ থেকে নেপালের দূরত্ব কম থাকায় তিস্তা ব্যারাজ থেকে ভোরে ও বিকেলে কাঞ্চনজঙ্ঘাসহ ছোট-বড় অনেক পাহাড় দেখা যায়। এটা এই এলাকার জন্য আনন্দের খবর।