শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেমিট্যান্সে কমেছে গতি

রেমিট্যান্সে কমেছে গতি

২০ দিনে দেশে ১১০ কোটি ডলার

প্রবাসী আয়ে গতি কমে গেছে। সরকারের নানা সিদ্ধান্তেও দেশে আসছে না কাঙ্ক্ষিত রেমিট্যান্স। প্রতিনিয়তই কমছে এ খাতের আয়। এরই মধ্যে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ডলারের দাম কমিয়ে দিয়েছে বাপেদা। আশঙ্কা করা হচ্ছে এতে করে আরো কমে যেতে পারে প্রবাসী আয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ১১০ কোটি মা‌র্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৩ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ১১ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৭০ কোটি ডলার।

অক্টোবরের প্রথম ২০ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৪ কোটি ৭১ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। আর বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৯৬ লাখ ডলার।

এই সময়ে বরাবরের মতো সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৬ কোটি ৬১ লাখ ডলার। এরপর অগ্রণী ব্যাংকে ৭ কোটি ৮৪ লাখ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে এসেছে ৬ কোটি ১৭ লাখ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ৬ কোটি ৮ লাখ, সোনালী ব্যাংকেও ৬ কোটি ৮ লাখ এবং রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ডলার।

আরও পড়ুনঃ  শঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা

আলোচিত সময়ে আট ব্যাংক কোনো রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে পারেনি। এগুলো হলো- বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি খা‌তের ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বিভিন্ন ছাড় দেওয়ার পরও গতি কম দেখা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে ১৫৪ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই অংক গত ৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পরিমাণের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগস্ট মাসে আসে ২০৩ কো‌টি ৭৮ লাখ (২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন) ডলার। আর জুলাইয়ে আসে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তিন হাজার ৫৯৮ কোটি (৩৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন) ডলার। প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুদ এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সা‌ড়ে ৪ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, রেমিট্যান্স বাড়াতে বৈধপথে রেমিট্যান্স আনতে আড়াই শতাংশ প্রনোদণা দেওয়া হচ্ছে। এটা নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্তভাবে দেশে আসে। এতে প্রবাসীরা উৎসাহিত হচ্ছেন। তাছাড়া নতুন করে বিভিন্ন দেশে শ্রমিক যাচ্ছে, অনেক দেশ শ্রমিক নিতে চুক্তি করছে। এসব দিক বিবেচনায় বলা যায়, আগামীতে বাড়বে প্রবাসী আয়।

সূত্রমতে, চলতি অক্টোবরের প্রথম ছয়দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার, বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ লাখ ডলার আর বিশেষায়িত এক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৫৮ লাখ ডলার।

আরও পড়ুনঃ  শেয়ারবাজারে ধস রোধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি

এসময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এনেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক। এরপর সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবং ডাচ–বাংলা ব্যাংক। তবে এখন পর্যন্ত কোনো রেমিট্যান্স আসেনি সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কর্মাশিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে।

গত অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। তারও আগের অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন