শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সড়কের পাশে বর্জ্যরে পাহাড় 

সড়কের পাশে বর্জ্যরে পাহাড় 

ডিসেম্বরের মধ্যে বর্জ্যের সমস্যা সমাধান করা হবে। স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনের জায়গা ক্রয় করা হয়েছে :  আতাউর রহমান সেলিম, মেয়র, হবিগঞ্জ পৌরসভা

হবিগঞ্জ শহরের ব্যস্ততম বাইপাস সড়কে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনার স্তুপ তৈরি হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎপাদিত বর্জ্য সড়কের দু’পাশে ফেলা হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ছড়াচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু। পাশাপাশি বাড়ছে দূর্গন্ধ। যে কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শহরবাসী।

তবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই এ বর্জ্যের সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছে হবিগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ। ময়লা-আবর্জনা সরাতে অস্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনের জন্য ১৬০ শতক জায়গা ক্রয় করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সড়কের দু’পাশে রয়েছে বৃন্দাবন সরকারি কলেজ, হবিগঞ্জ আধুনিক স্টেডিয়াম ও আনসার একাডেমি। ওই সড়কের রাস্তার দু’পাশে গড়ে উঠেছে ময়লা আবর্জনার স্তুপ রয়েছে। প্রতিদিন শহরের যাবতীয় ময়লা আবর্জনা ওই স্থানে ফেলে দেয় পৌরসভার নিয়োজিত কর্মীরা। নিয়মিত স্টেডিয়ামে খেলাধুলার আয়োজন করা হলেও দূর্গন্ধের কারণে দর্শকদের উপস্থিতি কমছে। এতে পথচারীরাও পড়েছেন বিপাকে। অনেকেই ওই এলাকা দিয়ে আসতে চান না।

স্থানীয় পথচারি মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ময়লা আবর্জনার কারণে শহরের লোকজন স্টেডিয়ামে আসতে চায় না। বিশেষ প্রয়োজনে আসলে অনেকেই নাকমুখ ঢেকে আসেন। আবর্জনার কারনে প্রতিনিয়ত এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

এদিকে, হবিগঞ্জ পৌরসভায় দৈনিক ৩৫ টন বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে মনুষ্য বর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য ও চিকিৎসা বর্জ্য রয়েছে। দিনের শুরুতেই বর্জ্য সংগ্রহ করে প্রাইমারি ডাম্পিং স্টেশনে স্থানান্তর করা হয়। মেডিকেল বর্জ্য হয় পৌরশহরে অনুমোদিত ৩৪টি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে। এসব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান সমূহের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলে। মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জ পৌরসভার সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি  (বেলা) এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, গৃহস্থালি বর্জ্য প্রতিটি বাসা বাড়ি থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মীর মাধ্যমে আবর্জনা সংগ্রহ করে সেকেন্ডারি ডাস্টবিনে ফেলা হয়। ৯টি ওয়ার্ডে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য ৭১টি যানবাহন ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ট্রাক, ভ্যান, রিকশা ট্রলি, ব্যাটারি চালিত পিকআপ। এ সময় বেলার আলোচনায় সভায় আধুনিক শহরকে পরিকল্পিত নগরায়ন হিসেবে গড়ে তুলতে সুপরিকল্পিত পয়নিস্কাশন ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্ন ও উন্নত নাগরিক সুবিধার প্রত্যাশা করে বক্তব্য রাখেন, বাপা হবিগঞ্জ সহ সভাপতি তাহমিনা বেগম গিনি, বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, হবিগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান শামিমসহ অনেকেই।

আরও পড়ুনঃ  ২০ জুনের মধ্যে কুমিল্লা সিটি নির্বাচন : ইসি

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা বাপার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘এসব ময়লা-আবর্জনার কারণে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শহরবাসী। এ ব্যাপারে আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জায়গা ক্রয় করেছে। বর্জ্যের এ সমস্যার সমাধান করা হলে স্টেডিয়ামসহ ওই এলাকায় বিনোদন প্রেমীদের উপস্থিতি বাড়বে।

হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই বর্জ্যের এ সমস্যা দূর হবে। ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ পৌরসভা কাজ শুরু করেছে। স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনের জন্য রিচি ইউনিয়নে জায়গা ক্রয় এবং শহরের বর্তমান ময়লা স্থানান্তরের জন্য অস্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন করতে মির্জাপুরে প্রায় ১৬০ শতক জায়গা কেনা হয়েছে। ওই জায়গার চারপাশে দেয়াল তৈরির জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া করা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অস্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা ফেলা যাবে। এ বিষয়ে তিনি পরিবেশবাদী বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংগঠনসহ এ সংশ্লিষ্ট সকলকে স্থায়ী এবং অস্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন পরিদর্শনের আহবান জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন