রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্রুনাইয়ের বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব

ব্রুনাইয়ের বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব

বাংলাদেশের ব্যবসায়-বাণিজ্যে চীনের বাজার ধরতে ব্রুনাইয়ের সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী দাতো সেরি সেটিয়া ড. আওয়াং হাজী মোহাম্মদ আমিন লিউ আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, ব্রুনাইয়ের বন্দর ব্যবহার করলে চীনের সঙ্গে দূরত্ব অনেক কমবে। এতে খরচ ও সময় সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

তার আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি অর্থমন্ত্রীকে জানান, ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশী শ্রমিকদের জামানত হিসেবে ১৬’শ ডলার দিতে হয়। মালয়েশিয়ার জন্য এ পরিমাণ ৫’শ ডলার। তিনি অর্থমন্ত্রীকে এই বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানান।

টিপু মুনশি বলেন, সরকারের বিদেশি বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালার কারণে বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক উদ্যোক্তাদের জন্য সবচেয়ে আদর্শ গন্তব্য। এদেশে কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি চীন-ভারতের ২৭০ কোটি মানুষের বাজারও ধরা যাবে। কেননা দুটি দেশেই বেশিরভাগ পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ।

এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম, এমপি ব্রুনেইকে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি মানবসম্পদ নেয়ার আহ্বান জানন। এছাড়াও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর জন্য আলাদা একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তুাব দিয়ে ব্রুনায়ের বিনিয়োগের প্রত্যাশা করেন।

বৈঠকে ব্রুনেইয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী দাতো সেরি সেটিয়া ড. আওয়াং হাজী মোহাম্মদ আমিন লিউ আবদুল্লাহ তার দেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে ব্যবহারের জন্য আহ্বান জানান।

বাংলাদেশী কর্মীদের প্রশংসা করে ব্রুনেইয়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো সেরি পাদুকা আওয়াং হাজি আহমাদদিন বিন হাজী আবদুল রহমান বলেন, ব্রুনেইয়ের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এসব কর্মীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  পরিবেশ-প্রতিবেশ দূষণে, ১৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

এদিকে বাংলাদেশকে পরবর্তী বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বেছে নিতে সফররত ব্রুনেইয়ের অর্থমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন। রবিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা সফররত ব্রুনেইয়ের অর্থমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে গভীর সমুদ্র বন্দর, একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক, ট্যুরিজম পার্ক, নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রোরেল, এলএনজি টার্মিনালসহ পুরো দেশকে সড়ক ও রেলপথে সংযুক্ত করার প্রকল্প চলছে। বাংলাদেশের বর্তমান অগ্রগতির চিত্র অতীতের তুলনায় অনেক ভিন্ন। এই অগ্রযাত্রায় সামিল হতে ব্রুনাইকে আহ্বান রইলো।

হালাল খাবার, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, আইসিটি, প্লাস্টিক, পেট্রোকেমিক্যাল, জাহাজ নির্মাণ, পর্যটন, অবকাঠামো উন্নয়ন, পেট্রোলিয়াম, জ্বালানিখাতে দুদেশের বাণিজ্য বিনিয়োগ সম্পর্ককে উন্নত করার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন মোঃ জসিম উদ্দিন।

এফবিসিসিআই পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী বাংলাদেশের সাথে যৌথ উদ্যোগে জাহাজ নির্মাণ, স্বাস্থ্য ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে দক্ষ মানবসম্পদ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশের ব্রুনাইয়ের হালাল খাদ্যপণ্য বিপণনে দেশটির ঘানিম ইন্টারন্যাশনাল ও বাংলাদেশের জেডইএস ট্রেডিংয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হয়। ঘানিম ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে সিইও ড. নূর রহমান ও জেডইএস ট্রেডিংয়ের পক্ষে এফবিসিসিআই পরিচালক ড. কাজী এরতেজা হাসান চুক্তিতে সই করেন।
পরে গুলশানের ইউনিমার্ট লবিতে ব্রুনেই হালাল ফুডের পণ্যসামগ্রী বিক্রির জন্য একটি আউটলেটের উদ্বোধন করেন ব্রুনাই দারুসসালাম সরকারের অর্থমন্ত্রী দাতো সেরি সেটিয়া ড. আওয়াং হাজী মোহাম্মদ আমিন লিউ আবদুল্লাহ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো সেরি পাদুকা আওয়াং হাজি আহমাদদিন বিন হাজী আবদুল রহমান।

আরও পড়ুনঃ  ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রাঙামাটির পর্যটন খাত

আনন্দবাজার/কআ

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন