শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৃজনশীলতায় মুখর কিশোর-কিশোরী

সৃজনশীলতায় মুখর কিশোর-কিশোরী

সারাদেশে চালু ৪৮৮৩ কিশোর-কিশোরী ক্লাব

নারীদের সচেতনতার শিক্ষা

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন কিশোর-কিশোরীদের জীবনমানের উন্নয়নে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে ক্লাবগুলো। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিশেষ করে নারী সমাজকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে এবং পারিবারিক বৈষম্যের শিকার কিশোরীদের সমাজের উন্নয়নের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে সরকার দেশের জেলা উপজেলা ও পৌরসভায় গড়ে তুলেছে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সঙ্গে ক্লাবগুলোর কার্যক্রম চলছে। সম্প্রতি উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিশোর কিশোরী ক্লাবের শিক্ষার্থীদের মাঝে আইডি কার্ড ও বই বিতরণ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এসব ক্লাব পরিচালিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য বাস্তবায়নে সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ক্লাবের শিক্ষক ও জেন্ডার প্রোমোটার নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

পড়াশুনার পাশাপাশি ক্লাব গুলোতে ছুটির দিনে নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বয়সঃসন্ধিকালের সমস্যা কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, নারী নির্যাতন, শিশু পাচার কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় ইত্যাদি শেখানো হয়। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীরা উপকৃত হচ্ছে বলে জানান অনেকে।

সম্প্রতি কাশিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিশোর কিশোরী ক্লাবের শিক্ষার্থীদের মাঝে আইডি কার্ড  ও বই বিতরণণ কালে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার, জেন্ডার প্রোমোটার মাসুদ পারভেজ, যাদুরচর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মোছলেমা খাতুন, সংগীত শিক্ষক রাশেদা খাতুন রুনা, আবৃত্তি শিক্ষক নাসির হোসেনসহ আরও অনেকে।

আরও পড়ুনঃ  দ্বার খুললেও হা‌সি নেই

শৌলমারী ইউনিয়ন ক্লাবের সংগীত শিক্ষক কায়সার আহমেদ লেবু বলেন, কিশোর অপরাধ থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবে এবং দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও ক্লাবভিত্তিক বাল্যবিয়ের বিরদ্ধে সমাজের মানুষের মাঝে জনসচেতন সৃষ্টি  করছে কিশোর কিশোরী ক্লাব।

রৌমারী উপজেলার একজন জেন্ডার-প্রোমোটার মাসুদ পারভেজ জানান, প্রতিটি ক্লাবে মাসে একবার করে কিশোর-কিশোরীদের জেন্ডার ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন সম্পর্কে ক্লাবে ক্লাস নেন তিনি। এছাড়াও প্রত্যেকটি ক্লাবের জন্য একজন করে সংগীত শিক্ষক ও একজন করে আবৃতি শিক্ষক আছেন। সারা বাংলাদেশে এই পর্যন্ত সরকার ৪ হাজার ৮শ ৮৩টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব সরকারিভাবে চালু আছে।

রৌমারী উপজেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে মোট ছয়টি সরকারি কিশোর-কিশোরী ক্লাব আছে। ঝরে পড়া শিশুর পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নের/ উপজেলার কাছাকাছি হাই স্কুল ও প্রাইমারী স্কুল থেকে ১০ জন কিশোর ও ২০ জন কিশোরী নিয়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়। ক্লাবের সকল সদস্য ৫ম শ্রেণী থেকে ৯ম/১০ম ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রী।

মাসুদ পারভেজ বলেন, সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সরকারের ২০৪১ সালের ভিশন বাস্তবায়নে সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নমূলক কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

রৌমারী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সরকারি/ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব অগ্রাধিকার প্রকল্প এই কিশোর কিশোরী ক্লাব। সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্পের দায়িত্ব নিয়েছে। সমাজের ভালো-মন্দ দিকসহ যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে নিয়মিত ও শিক্ষার্থী, শিক্ষক, জেন্ডার প্রোমোটার, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি, ইউপি সদস্য, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতে মাসিক আলোচনা সভা করা হয়। আমাদের এই ক্লাবগুলো সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন