করোনা মহামারিতে দীর্ঘ আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর বিদেশি পর্যটকদের জন্য দরজা খুলছে ভুটান। এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে বিদেশি নাগরিকরা ভুটানে যেতে পারছেন বলে সে দেশের ট্যুরিজম কাউন্সিল ঘোষণা করেছে।
এদিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শেকশোর হোটেলে ‘ওয়েলকাম টু ভুটান ট্যুরিজম রি-অপেনিং উভেন্ট অব দ্যা কিংডম ভুটান’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন প্রধান অতিথি থেকে ‘ভুটান বিলিভ’ অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন।
এ সময় ঢাকাস্থ ভুটান এম্বাসির হেড অব চেনসেরি এন্ড সেকেন্ড সেক্রেটারি সেরাব দর্জি, মিনিস্টার কনসোলার ট্রেড) কেনচো থিনলে ও এডনিমিস্ট্রেটিভ অফিসার সুকেশ চাকমাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মোকাম্মেল হোসেন মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে প্রথম স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় ভুটানের প্রতি আবার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবত করোনার কারণে বিশে^র পর্যটনব্যবস্থা থমকে ছিল ভুটানও তার বাইরে নয়। নতুন করে ‘ভুটান বিলিভ’ নামে পর্যটন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আমি বাংলাদেশের পর্যটন সচিব হিসেবে শুভকামনা জানাই।
সচিব বলেন, ভুটানের সঙ্গে পর্যটনশিল্পের বিকাশে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক্ষ স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেই আলোকে আমরা নতুন করে দুটি দেশের মধ্যে পর্যটন বিষয়ক কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করতে পারবো। উভয়ের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটনশিল্পের বিকাশে মাস্টারপ্লান তৈরি করছে। আশাকরি আমরা নিজেদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হবো।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে দেমটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ‘ব্র্যান্ড ভুটান’ নামে নতুন একটি ব্র্যান্ডও উদ্বোধন করছেন।
ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টানডি দোরজিও এক বক্তব্যে জানিয়েছেন, তারা বিদেশিদের কাছ থেকে চড়া হারে এসডিএফ নিয়ে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতেই কাজ করছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে ভুটানের পর্যটনশিল্পে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কয়েকটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
সেরাব দর্জি জানান, বিশ্বের মাত্র দুটো দেশ তথা বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের জন্য ভুটানের ভিসা-অন-অ্যারাইভাল সুবিধা আছে। ফলে বাংলাদেশের নাগরিকরা ফুন্টশলিংয়ে ভুটানের সড়ক প্রবেশপথে অথবা পারো বিমানবন্দরে নেমেও ভিসা সংগ্রহ করতে পারেন। সুযোগ আছে অনলাইনেও আবেদন করতে। আর ভারতীয় নাগরিকদের ভুটানে যেতে ভিসা না-লাগলেও একটি বিশেষ ‘পারমিট’ নিতে হচ্ছে, যা আগে থেকেই চালু আছে।
তিনি বলেন, ভুটান ভারতীয় নাগরিকদের বাইরে সকলের জন্য ‘সাসটেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট ফি’ (এসডিএফ) ২০০ ডলার করা হয়েছে। নতুন এই নিয়মে প্রতিটি পর্যটককে প্রত্যেকদিন ২০০ ডলার করে এসডিএফ দিতে হবে। আগে এই ফি ছিল মাথাপিছু মাত্র ৬৫ ডলার। আমরা ভুটানে ‘কোয়ালিটি ট্যুরিজম’র ব্যবস্থা করছি। পর্যটনখাতের সঙ্গে যুক্ত সকলকে, যেমন হোটেল বা গেস্ট-হাউস ব্যবসায়ী, গাড়ির চালক, ট্যুর গাইড সবাইকে প্রশিক্ষণ দিয়ে খুব কঠোর ‘সার্টিফিকেশনের’র আওতায় আনা হয়েছে, যাতে তারা বিদেশি পর্যটকদের সেরা সেবা দিতে পারে।
আনন্দবাজার/কআ