শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুগ্ধশিল্পে দৃষ্টান্ত বিক্রমপুর আর্দশ দুগ্ধ খামার সমিতি

দুগ্ধশিল্পে দৃষ্টান্ত বিক্রমপুর আর্দশ দুগ্ধ খামার সমিতি

দৈনিক উৎপাদন ৩শ লিটার দুধ

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বিক্রমপুর আর্দশ দুগ্ধ খামার সমবায় সমিতি প্রতিদিন ৩শ’ লিটার গরুর দুধ বাজারজাত করছে। মহামারি করোনার প্রমদিকে সমিতিটি যাত্রা শুরু হয়। স্থানীয় ৩০ জন খামারির উদ্যোগে গড়ে উঠে এ সমিতি। বর্তমানে সমিতির সদস্য সংখ্যা মোট ৩৫ জন। ৬২ টাকা ৫০ পয়সা দরে প্রতি লিটার দুধ বাজারজাত করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন সরকারি সহযোগিতা পেলে এ সমিতির সার্বিক উন্নতির পাশাপাশি আর্কিভাবে লাভবান হবেন খামারিরা। এতে দুধ উৎপাদনে খামারিদের আগ্রহ বাড়বে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রাঢ়িখাল এলাকার বালাশুর, বউবাজার ও ভাগ্যকূলের বেশকিছু দুগ্ধ খামার ও গরু মোটা তাজাকরণের বেশকিছু মিনি খামার গড়ে উঠেছে। প্রায় বাড়িতেই দুধের গাভিসহ অন্যান্য দেশি-বিদেশি জাতের গরুর লালন পালন হচ্ছে এ অঞ্চলে।

জানা যায়, স্থানীয় খামারিরা দেশে করোনাকালীন লকডাউন পরিস্থিতির প্রম দিকে নানা প্রতিকূলতার মাঝে খামারে উৎপাদিত দুধসহ গবাদি পশু লালন পালন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। পরে কয়েকজন উদ্যোক্তা মিলে “বিক্রমপুর আর্দশ দুগ্ধ খামার সমবায় সমিতি নামক ব্যানারে দুধ বাজারজাত করা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় নূর মো. ভূঁইয়াকে সভাপতি ও মো. রফিক বেপারীকে সাধারণ সম্পাদক করে করে সমিতির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এর পর েেক এ সমিতির সদস্যরা সম্মিলিতভাবে খামারের দুধ বাজারজাত করে আসছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি লিটার দুধ বিক্রির নগদ প্রদান ৬২ টাকা ৫০ পয়সা বাদেও প্রতি লিটারে অতিরিক্ত ২ টাকা সমিতির কাছে সঞ্চয় থাকছে। বাৎসরিক হিসাব অনুসারে সদস্যরা আলাদাভাবে জমাকৃত এ টাকা তুলে নিচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ  উপকূলে লবণসহনশীল ধানবীজ বিতরণ

খামারিরা জানায়, দিনের সকাল-বিকাল সমিতির মাধ্যমে দুধ বিক্রি করছি। ঝড় বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেও দুধ নিয়ে কোন চিন্তায় পড়তে হচ্ছেনা। কোনো সমস্যার সম্মূখিন হলে সমিতির পক্ষ েেক সহযোগিতা পাচ্ছি। বিক্রমপুর আর্দশ দুগ্ধ খামার সমবায় সমিতির অন্যতম সদস্য জিএম খালিদ বলেন, মোট ৩০টি খামার েেক প্রতিদিন প্রায় ৩শ’ লিটার দুধ সংগ্রহ হচ্ছে। প্রতি লিটার দুধ ৬২ টাকা ৫০ পয়সা দরে কেনা হচ্ছে। এসব দুধ ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে। তবে দুধের গুণগতমান নির্ণয়ের মেশিনসহ প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জামাদির সংকট আছে। এগুলো সংগ্রহ করা গেলে সমিতি উপকৃত হবে। তিনি আরও বলেন, দুধ থেকে ক্রীম আলাদা করে দুগ্ধজাতিয় বিভিন্ন ধরনের খাবার উৎপাদন করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সংশ্লিষ্টজনদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, সমিতিটি চালু হওয়ার পর চার বার পরির্দশন করেছি। সমিতির সদস্যদের নিয়ে একবার পরামর্শ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে লাইভ স্টোক ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২ লাখ টাকা মূল্যের ১টি ক্রীম সেপারেটর মেশিন প্রদান করা হয়েছে। এতে সমিতি দ্বিগুন লাভবান হচ্ছে। খামারগুলোতে নিয়মিত বিভিন্ন ভ্যাকসিন, বীজ (শংকরায়ন) ও গবাদি পশুর চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সমিতির সংশ্লিষ্টগণ যদি চায় তাহলে লেক্টোমিটার মেশিনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এতে তারা দুধের গুণগতমান নির্ণয় করতে পারবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন