শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিঙি নৌকাই ওদের ভরসা

ডিঙি নৌকাই ওদের ভরসা
  • ঝুঁকিতে শিশু শিক্ষার্থীরা
  • ১৬ গ্রামের দুঃখ একটি ব্রিজ
  • নদীর এপাড়ে স্কুল ও শহর, ওপাড়ে গ্রাম

নদীর ওই তীরে বিদ্যালয়, অন্য তীরে গ্রামগুলো। মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে তুলশী গঙ্গা নদী। অন্যসময় পানি কিছুটা কম থাকলেও বর্ষা মৌসুমে তুলশী গঙ্গা যৌবন পায়। দুই কূল থৈ থৈ করে জলে। স্রোতও থাকে বেশ। পারাপারে নেই কোনো সাঁকো। এমন পরিস্থিতি মাথায় নিয়ে শতশত শিশুরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিঙি নৌকায় চেয়ে পার হয় নদী। এটি সারা বছরের চিত্র। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়। সেখানে ব্রিজ না হওয়ায় অন্য পাড়ের ১৫ থেকে ১৬টি গ্রামের প্রায় ১৪ হাজার মানুষেরও দুর্ভোগের শেষ নেই। আশেপাশের গ্রামের মানুষের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।

ব্রিজ সংকটে চরম বিপদের মধ্যে জীবন পার করছেন আমদই ইউনিয়নের মুরারীপুর, পাইকর, রাংতা, গোপালপুর, ঘোনাপাড়া, সুন্দরপুর, পুরানাপৈল ইউনিয়নের পাইকপাড়া, গোবিন্দপুর ও গঙ্গা দাশপুরসহ আরো কয়েকটি গ্রাম।

স্থানীয়রা জানান, জরুরি প্রয়োজন হলে যোগাযোগের ভিষণ কষ্ট হয়। বিশেষ করে রাতে যদি কারো অসুখ হয়, জরুরিভাবে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় তাহলে বেশ কষ্ট পোহাতে হয় আমদই ও পুরানাপৈল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের।

সুন্দরপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, জয়পুরহাট সদরে যাওয়ার পথ একটাই। সেটিও নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হয়। সে কারণ মানুষের কষ্টের শেষ থাকে না। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ দ্রুত পৌঁছাতেও পারে না গন্তব্যে।

আমদই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবু জানান, একটি ব্রীজের জন্য ১৫টি গ্রামের মানুষকে কষ্ট করতে হয়। ব্রীজটি হলে গ্রামবাসীদের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে। সবচেয়ে বেশ কষ্টের মধ্যে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। শিশুরা প্রতিদিন নৌকায় পার হয়ে বিদ্যালয়ে যায়। আবার বাড়ি ফিরে আসে নৌকায় করে।  

আরও পড়ুনঃ  করোনা পরবর্তী এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরারম্ভ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

১৯৭০ সালে জয়পুরহাট সদর উপজেলার মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। তুলশী গঙ্গা নদীর তীরে বিদ্যালয়টি। ওই বিদ্যালয়ে ৩০০ শিক্ষার্থী।

পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সৈকত বলেন, শিশুদের নৌকায় পার হতে দেখলে কষ্ট হয়। এটি চিন্তার কারণও। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ব্রিজটি জরুরি হয়ে পড়েছে।

আমদই ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের জমির উদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমে নদী ভরা থাকে। শিশুদের এসময় নদী পার হওয়া চিন্তার কারণ। অভিভাবকরাও চিন্তায় পড়ে যায়। অনেক অভিভাবক শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। একটা সাঁকো হলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো।

মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রনব চন্দ্র মন্ডল বলেন, এটা দীর্ঘদিনের ভোগান্তি। এটি থেকে মুক্তি জরুরি হয়ে পড়েছে। এলাকার উন্নয়নে এখানে ব্রিজ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত হোসেন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানি। আমরা এলাকাটি পরিদর্শনও করেছি। চেষ্টা করছি খুব দ্রুত সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য।

সংবাদটি শেয়ার করুন