শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পল্লী চিকিৎসকের ইনজেকশনে শিশুর মৃত্যু

পল্লী চিকিৎসকের ইনজেকশনে শিশুর মৃত্যু

নওগাঁর মহাদেবপুরে এক পল্লী চিকিৎসকের ভুল ইকজেকশনে চার বছরের এক শিশুর মৃতুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হাতুর গ্রামে। নিহত ওই শিশুর নাম সাব্বির রহমান। সে পত্নীতলা উপজেলার চান্দুইল গ্রামের ছানোয়ার হোসেনের ছেলে। ঘটনার পর থেকে ওই পল্লী চিকিৎসক পলাতক রয়েছে।

নিহতের পরিবার জানায়, রোববার বেলা ১১টার দিকে ছানোয়ার হোসেন তার ছেলেকে নিয়ে মহাদেবপুর উপজেলার গ্রামের পল্লী চিকিৎসক প্রদীপ কুমার মন্ডলের কাছে নিয়ে আসে দাঁতের ব্যাথার চিকিৎসা করানোর জন্য। এসময় দাঁতের ব্যাথা উপসমের জন্য ওই পল্লী চিকিৎসক বলেন, একটি দাঁত তুলে ফেলতে হবে। তার আগে দুটি ব্যাথানাশক ইনজেকশন পুশ করতে হবে। এরপর দুটি ইনজেকশন পুশ করে দাঁত উঠানো হয়। দাঁত উঠানোর পরপরই সাব্বির খিচুনি দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তখন ওই পল্লী চিকিৎসক তার চেম্বার থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা সাব্বিরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত বলে ঘোষণা করেন।

নিহত শিশুর বাবা ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমি এর আগে বেশ কয়েকবার পল্লী চিকিৎসক প্রদীপ কুমার মন্ডল এর কাছে ছেলের দাঁতের চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলাম। তবে, দাঁতের ব্যাথা ভালো না হওয়ায় তার সঙ্গে গতকাল রোববার সকালে ফোনে কথা হলে তিনি তার চেম্বারে যেতে বলেন। বেলা ১১টার দিকে তার চেম্বারে গেলে তিনি ব্যাথা হওয়া একটি দাঁত তুলে ফেলতে বলেন। তার কথায় রাজি হলে তিনি দাঁত তুলে ফেলার আগে দুটি ইনজেকশন পুশ করেন। দাঁত তুলে ফেলার পর আমার ছেলে খিচুনি দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এসময় ওই চিকিৎসক দ্রুত পালিয়ে যায়। ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে সেখানকার ডাক্তার জানায় অনেক আগেই আমার ছেলে মারা গেছেন। আমার ছেলেকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলেছে ওই চিকিৎসক। সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারলে তিনি বলতে পারতেন, আমরা অন্য কোথাও গিয়ে চিকিৎসা করাতাম। ওই পল্লী চিকিৎসকের কঠিন শাস্তি চাই। আর যেন কোনো শিশুকে আমার ছেলের মত ভুল চিকিৎসায় মরতে না হয়।

আরও পড়ুনঃ  জনগণের দ্বারপ্রান্তে সেবা পৌছে দিতে হবে

মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খোরশেদুল ইসলাম বলেন, শিশু সাব্বিরকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই মারা যায়। ভুল চিকিৎসার কারনেই এমনটা হয়ে থাকতে পারে। পরিবারের সদস্যরা বলছেন দুটি ইনজেকশন পুশ করা হয়েছিল। হয়তো হাইপার সেনসেনটিভ বা নিউজেনিভ সকের কারণেও হতে পারে। সাব্বিরের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য পুলিশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেন পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, সাব্বিরের মরদেহটি উপজেলা হাসপাতাল থেকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। নিহতের বাবা থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বর্তমানে অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক প্রদীব কুমার মন্ডল পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন