শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাসে ৫ টাকা মেট্রোরেলে ১০

বাসে ৫ টাকা মেট্রোরেলে ১০
  • দ্বিগুণ ভাড়া অন্যায্য
  • ৫০ শতাংশ কমানোর দাবি জাতীয় কমিটির

মেট্রোরেলের সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৫০ শতাংশ কমানোর দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর)। রাষ্ট্রীয় এই পরিবহনের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫০ শতাংশ কমিয়ে ১০ টাকা এবং প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া পাঁচ টাকা থেকে কমিয়ে সর্বোচ্চ তিন টাকা নির্ধারণের জোর দাবি জানিয়েছে। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি হাজি মো. শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এই দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, বেসরকারি বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া যেখানে ১০ টাকা, সেখানে রেলের মতো রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার দ্বিগুণ ভাড়া সম্পূর্ণ অন্যায্য, অনাকাঙ্খিত ও অগ্রহণযোগ্য। এতে যেমন একদিকে সাধারণ জনগণের যাতায়াত ব্যয় বেড়ে যাবে, অনদিকে বাস-মিনিবাসসহ বেসরকারি পরিবহন মালিকেরা বেশি লাভবান হবেন।

জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহন ব্যয় অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় ৪০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে। এতে স্বল্প ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকায় বসবাসকারীদের সমস্যা আরো বেশি। এমন অবস্থায় মেট্রোরেলের অস্বাভাবিক ভাড়া নির্ধারণ করে আগাম ঘোষণা দেওয়ায় রাজধানীবাসী চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে।

আগামী ডিসেম্বরে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই অংশে স্টেশন রয়েছে নয়টি। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আগামী বছরের শেষে চালুর পরিকল্পনা আছে। এই অংশে স্টেশন রয়েছে সাতটি। মেট্রোরেলের স্টেশনে লিফট, এস্কেলেটর ও সিঁড়ি দিয়ে ওঠা যাবে। তিনতলা স্টেশন ভবনের দ্বিতীয় তলায় কনকোর্স হল। এখানে টিকিট কাটার ব্যবস্থা, অফিস ও নানা যন্ত্রপাতি থাকবে। তিনতলায় রেললাইন ও প্ল্যাটফর্ম। শুধু টিকিটধারী ব্যক্তিরাই ওই তলায় যেতে পারবেন। দুর্ঘটনা এড়াতে রেললাইনের পাশে বেড়া থাকবে। স্টেশনে ট্রেন থামার পর বেড়া ও ট্রেনের দরজা একসঙ্গে খুলে যাবে। আবার নির্দিষ্ট সময় পর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হবে।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশি হত্যার বিচার হবে : লিবিয়া

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু হলে মেট্রোরেল ভোরে দুই দিক থেকে যাত্রা করবে। প্রাথমিকভাবে রাত ১২টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে। শুরুতে ১০ মিনিট অন্তর মেট্রোরেল চলবে। পর্যায়ক্রমে এক ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের সময়ের পার্থক্য কমে আসবে। চূড়ান্তভাবে প্রতি তিন মিনিট পরপর মেট্রোরেল চলার কথা রয়েছে। শুরুতে দৈনিক ৪ লাখ ৮৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন।

একটি ট্রেনের ছয়টি কোচের মধ্যে দুই প্রান্তের দুটি কোচকে বলা হচ্ছে ট্রেইলর কার। এতে চালক থাকবেন। এসব কোচে ৪৮ জন করে যাত্রী বসতে পারবেন। মাঝখানের চারটি কোচ হচ্ছে মোটরকার। এতে বসার ব্যবস্থা আছে ৫৪ জনের। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে যেতে পারবেন ৩০৬ জন। প্রতিটি কোচ সাড়ে ৯ ফুট চওড়া। মাঝখানের প্রশস্ত জায়গায় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করবেন।

আগামী ডিসেম্বরে চালু হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত মেট্রোরেল। প্রথম পর্যায়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এই রেল চলবে। এ রুটের ভাড়া ধরা হয়েছে জনপ্রতি ৬০ টাকা। পরবর্তী সময়ে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে এই পরিবহন। সে ক্ষেত্রে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত জনপ্রতি ১০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন