শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডলারের বাজারে সুখবর

ডলারের বাজারে সুখবর

দেশের বাজারে মার্কিন ডলারের সংকট প্রকট। রিজার্ভ থেকে ডলার করতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।  সংকট কাটাতে আমদানিতে ঝুড়ে দেয়া হয়েছে নানা শর্ত। ফলে কমেছে আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ। যার প্রভাব পড়ছে ডলারের বাজারে। গতকাল মঙ্গলবার খোলা বাজারে নগদ ডলার বিক্রি হয়েছে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকায়।

জানা গেছে- আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকা। চলতি বছরের মে মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। এ হিসাবে দেড় মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা ৫৫ পয়সা। তবে বা‌ণি‌জ্যিক ব্যাংকগু‌লো‌তেও এখন ১০৬ থে‌কে ১০৮ টাকায় নগদ ডলার বি‌ক্রি হচ্ছে। আর খোলাবাজারে ডলারের দাম ১১৫ টাকা পর্যন্ত।

ডলার বাজার স্থিতিশীল করতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈঠক শেষে ডলারের বাড়তি মুনাফার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, এখন ডলারের টানাপড়েন চলছে। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বাফেদা ও বাংলাদেশ ব্যাংক বৈঠক করেছে। ডলারের মার্কেট যাতে খুব কম সময়ের মধ্যে স্থিতিশীল করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব শেষ তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসের ১১ দিনে দেশে মোট ১৬১ কোটি ডলার সমপরিমাণ মূল্যের আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। যা জুলাই মাসের তুলনায় ৯৪ কোটি ডলার বা ৩৬ শতাংশ কম। জালাই মাসে আমদানি হয়েছিল ২৫৫ কোটি ডলার। গেল জুলাই মাসে দেশে মোট ৫৫৫ কোটি ডলার মূল্যের পণ্যের আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা জুন মাসের তুলনায় ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ কম। জুন মাসে আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছিল ৭৯৬ কোটি ডলারের। তবে জুন মাসে অবশ্য মে মাসের তুলনায় আমদানি ঋণপত্র ৭ শতাংশ বেশি খোলা হয়েছিল। মে মাসে ঋণপত্র খোলা হয় ৭৪৪ কোটি ডলারের। এপ্রিল মাস থেকে আমদানি কমতে শুরু করে। এপ্রিল মাসে মার্চের তুলনায় আমদানি ঋণপত্র খোলা কমেছিল প্রায় ১৩ শতাংশ। মে মাসেও এপ্রিলের তুলনায় আমদানি ঋণপত্র খোলা কমেছে সাড়ে ১৩ শতাংশ।

আরও পড়ুনঃ  বড় অঙ্কের ঋণ দেয়ার প্রবণতায় ঝুঁকির মুখে ব্যাংকগুলো

এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ ঠিক রাখতে গিয়ে প্রচুর ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে। গত বছর আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করা রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। ১২ আগস্ট পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়ায় তিন হাজার ৯৫৯ কোটি (৩৯ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন) ডলারে। প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুদ এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ কমাতে আমদানিতে রাশ টানার উদ্যোগ শুরু হয় গত মে মাস থেকে। তবে ৪ জুলাই এ ক্ষেত্রে বেশ কঠোরতা আরোপ করা হয়। গাড়ি, স্বর্ণ, টিভি, ফ্রিজসহ ২৭ ধরনের পণ্য আমদানির এলসি মার্জিন নির্ধারণ করা হয়েছে শতভাগ। আর জ্বালানি, অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, শিল্পে ব্যবহারি কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতিসহ কিছু পণ্য বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে এলসি মার্জিনের ন্যূনতম হার হবে ৭৫ শতাংশ। উভয় ক্ষেত্রে মার্জিনের জন্য ঋণ দেওয়া যাবে না। এর মানে এলসি খোলার সময়ই আমদানিকারকের নিজস্ব উৎস থেকে পুরো অর্থ নগদে দিতে হবে।

চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ১০ দিনে ৮১ কো‌টি ৩০ লাখ (৮১৩ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ৯৬ টাকা ধ‌রে) এর পরিমাণ ৭ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা।

সংবাদটি শেয়ার করুন