রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লোকসানের শঙ্কায় ঈশ্বরদীর পাট চাষিরা

লোকসানের শঙ্কায় ঈশ্বরদীর পাট চাষিরা

ঈশ্বরদী উপজেলার পাটচাষিরা এবার পানি সংকটে ভুগছেন। বপনের ১০০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে পাট কাটতে হয় ও আষাঢ় মাসের শেষে পাটকাটা শুরু করতে হয়। তবে চলতি বছর বৃষ্টি না থাকায় পাট কাটতে পারছেন না চাষিরা। আবার পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাওয়ায় জলাশয়ে পাট জাগ দেয়ার জন্য নূন্যতম যে পরিমাণ পানি থাকার প্রয়োজন সেটিও নেই। এতে পাট কেটে পচনের জন্য জাগ দেয়া চাষিরাও পড়েছেন বিপদে।

উপজেলার দাশুড়িয়া, মুলাডুলি, লক্ষ্মীকুণ্ডা, সাহাপুর ইউনিয়নের চাষিরা বলেছেন, না কাটার কারণে কিছু পাট ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে আবার পাট কেটে বাধ্য হয়ে অপরিষ্কার পানিতে জাগ দিচ্ছেন। ফলে পাটের আঁশের রং কালচে হওয়ায় বাজারে কাঙ্খিত দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। যে জমিতে ২-৩ ইঞ্চি পানি আছে সেখানে পাট জাগ দেয়ায় গরমের কারণে তাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এতে পাটের রং নষ্ট হয়ে দাম কমে যাবে। পাট জাগ দিতে নসিমন বা ভ্যানে করে নিয়ে যেতে হচ্ছে কয়েক কিলোমিটার দূর। এ জন্য শ্রমিক লাগছে বিঘাপ্রতি ১০ জন করে বেশি। ফলে পাট নিয়ে কোটি কোটি টাকা লোকসানের শঙ্কায় কৃষক।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে পাট কেটে ফেললেও পানির অভাবে জাগ দিতে না পেরে রাস্তার ওপর স্তুপ করে রেখেছেন অনেক চাষি। এ অবস্থায় পাটের গুণগত মান নষ্ট হয়ে ভালো দাম না পাওয়ার আশঙ্কায় আছেন তারা। কালিকাপুর গ্রামের চাষি হামিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর অন্য জায়গায় পাট জাগ দেই। চলতি বছর সেখানে পানি না থাকায় পুকুরে মাছ না ছেড়ে পাট জাগ দিচ্ছি।

আরও পড়ুনঃ  বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথে পর্যটন

একই ইউনিয়নের চাষি সরদার রেজা বলেন, আশপাশে পানি না থাকায় পাট কেটে ক্ষেত থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরে একটি খালে নিয়ে যেতে হয়েছে জাগ দেয়ার জন্য। এতে শ্রমিক বাবদ অন্তত ১৮ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে।

হাসেম আলীর মতো উপজেলার অধিকাংশ পাটচাষির একই অবস্থা। গত বছর পাটের দাম বেশি পাওয়ায় চলতি উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের চাষি হাসেম আলী জানান, চলতি বছর তিনি চার বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ বছর পাটের আবাদে ঝুঁকে পড়েন উপজেলার চাষিরা। পাট আবাদ নির্বিঘ্নে হলেও এখন পাটকাটা ও জাগ দেয়া নিয়ে মহাবিপদে পড়েছেন চাষি।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদী উপজেলায় ৩৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বৃষ্টি না হওয়ার কারণে প্রান্তিক কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন